সামগ্রিকতাবােধ ও শিক্ষা

📜 ( 1 ) সামগ্রিকতাবােধ ও শিক্ষা :

🧾 পূর্বের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষণীয় বিষয়কে কতকগুলি ছােটো ছােটো অংশে ভাগ করে নিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে ওই বিষয়গুলি পৃথক পৃথকভাবে শেখানাে হত । এই শিক্ষা পদ্ধতি শিক্ষককেন্দ্রিক ও যান্ত্রিক এবং এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অবহেলিত ছিল । বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় সামগ্রিক পদ্ধতির উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । বর্তমানে যে – কোনাে বিষয় যেমন ইতিহাস , রাষ্ট্রবিজ্ঞান , গণিত প্রভৃতি বিষয়ে প্রথমে পাঠ্য বিষয়ের একটি সামগ্রিক রূপ শিক্ষার্থীর সামনে তুলে ধরা হয় এবং সেটিকে পরে ছােটো ছােটো অংশে ভাগ করে তার প্রতিটি অংশের ব্যাখ্যা করা হয় ।

🧾 যেমন ইতিহাসের ক্ষেত্রে ফরাসি বিপ্লবের কারণ , সিপাহি বিদ্রোহের কারণ ইত্যাদি পাঠ্য বিষয়গুলিকে প্রথমে বলে তারপর প্রতিটি কারণ স্বতন্ত্রভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়ােজন ।

🧾 বীজগাণিতিক প্রক্রিয়ায় সমস্যাসমাধানের ক্ষেত্রে আগে সম্পূর্ণ সমস্যাটি তুলে ধরা হয় । তারপর সেই সমস্যাটি বিশ্লেষণ করার সময় প্রয়ােজনীয় ফর্মুলা শেখানাে হয় । অর্থাৎ আগে বিশ্লেষণ থেকে সংশ্লেষণে যাওয়া হত । বর্তমানে সংশ্লেষণ থেকে বিশ্লেষণে এবং পরে পুনরায় সংশ্লেষণে যাওয়া হয় ।

📜 ( 2 )বিষয়বস্তুর সংগঠন ও তার বিচ্ছিন্নকরণের নীতি :

🧾 সংগঠিত বিষয়বস্তু থেকে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলিকে দূর করে প্রাসঙ্গিক ও সাধারণধর্মী বৈশিষ্ট্যগুলিকে বিচ্ছিন্ন করা হল এই নীতির মূলকথা । সুতরাং শিক্ষার্থীর শিক্ষাকে কার্যকর করে তুলতে হলে শিক্ষককে লক্ষ রাখতে হবে যাতে শিক্ষণীয় বিষয়ের প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্যকে শিক্ষার্থী বিচ্ছিন্ন বা পৃথক করতে পারে অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা যাতে অনর্থক অন্ধ বা যান্ত্রিক প্রচেষ্টা করে উদ্যম ও সময় নষ্ট না করে , সেদিকে লক্ষ রাখা শিক্ষকের অন্যতম কর্তব্য । উদাহরণ—

( i ) বৃত্তের পরিসীমা সম্বন্ধে ধারণা দিতে গিয়ে পরিসীমা , ব্যাস , ব্যাসার্ধ আলােচনা করতে হবে ও সেই সংক্রান্ত সমস্যা যাতে পৃথক করে আয়ত্ত করতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে ।

( ii ) ভৌতবিজ্ঞানে CO , – এর ধর্ম ও ব্যবহার সম্বন্ধে জানা থাকলে কোন্ অংশটুকু জীবন বিজ্ঞানের জন্য প্রয়ােজন তাকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে ।

( iii ) ভূগােলের আপেক্ষিক আর্দ্রতা , তাপমাত্রা ইত্যাদি জানতে পদার্থবিজ্ঞানের কোন্ অংশগুলি জানা প্রয়ােজন সেগুলিকে পৃথক করতে শিক্ষার্থীরা সমর্থ হবে ।