“■ শােনার ক্ষেত্রে সমস্যা ও সমাধানের উপায় :
মূলত বলার আগে শােনা জরুরি । কারণ নির্ভুলভাবে শােনার উপর সঠিকভাবে ভাষা বলতে শেখা নির্ভর করে । শিক্ষার্থীরা যদি শিক্ষকের শিক্ষণ কার্যক্রম , আলােচনা প্রভৃতি সঠিকভাবে শুনতে না পায় তবে তার পক্ষে কোনাে আলােচনায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব হয় না । তাই শিক্ষার্থীরা যাতে শিক্ষকের সমস্ত কার্যাবলি শুনতে পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে । তবে শােনার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের কয়েকটি সমস্যা দেখা দিতে পারে । নিচে সেগুলি আলােচনা করা হল –
( ১ ) সচেতনতার অভাব :
শিক্ষার্থীরা সচেতন না হলে শোনায় বাধা সৃষ্টি হতে বাধ্য । তাই তারা পঠনপাঠনের সময় যাতে সচেতন থাকে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি ।
( ২ ) ধৈর্যের অভাব :
কোনাে কিছু নতুন শিখতে হলে , জানতে হলে , ধৈর্য সহকারে শিক্ষকের কথা শুনতে হয় । ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে মনোযােগের অভাব ঘটবে । তাই শিক্ষকের কথা ঠিকমতাে শুনতে পাওয়া যাবে না ।
( ৩ ) উচ্চারণের ত্রুটি :
শিক্ষকের উচ্চারণ স্পষ্ট না হলে শিক্ষার্থীরা তা অনুধাবন করতে পারবে না । তাই শিক্ষকের উচ্চারণ যথাযথ ও স্পষ্ট হওয়া উচিৎ ।
( ৪ ) নীরস পাঠ পরিবেশন :
শিক্ষকের পঠনপাঠন যদি সাবলীল , সহজ , সরস না হয় , তা হলে শিক্ষার্থীদের মনােযােগ শিক্ষকের প্রতি আকৃষ্ট হয় না । অপরপক্ষে শিক্ষকের পূর্বপ্রস্তুতি না থাকলে সরস , সহজ ও সাবলীল পাঠ দেওয়া সম্ভব নয় ।
( ৫ ) মানসিক অস্থিরতা :
শিক্ষক কোনাে কারণে মানসিকভাবে সুস্থির না থাকলে , তাঁর শিক্ষণ ক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটবেই । বারবার তিনি অন্যমনস্ক হয়ে পড়বেন ও শিক্ষণকার্যে স্বতঃস্ফূর্ততা আসবে না । এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়বে সবচেয়ে । বেশি । তারা ঠিকমতাে ব্যাপারটাকে অনুধাবন করতে পারবে না ।
( ৬ ) আকর্ষণধর্মিতার অভাব :
শিক্ষকের শিক্ষণে যদি শিক্ষার্থীরা আকৃষ্ট না হয় তবে তারা বিষয়বস্তু শুনতে আগ্রহ বােধ করবে না। ক্রমশ অমনােযােগী হয়ে পড়বে । তাই শিক্ষকের উচিত নানা রকমের শিক্ষামূলক উপকরণ সংগ্রহ করে বিষয়বস্তু ছাত্রদের কাছে উপস্থাপিত করা ।
( ৭ ) সঠিকভাবে শােনার অভ্যাস গড়ে তােলা :
শিক্ষকের কাজ হল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঠিকভাবে শােনার অভ্যাস গড়ে তােলা । কোনাে আলােচনায় অংশগ্রহণ করিয়ে , বিতর্কসভায় বসিয়ে , কবিতা , ছড়া আবৃত্তির আসরে অংশগ্রহণ করিয়ে ছাত্রদের সঠিক শােনার অভ্যাস গড়ে তােলা সম্ভব ।
( ৮ ) শিক্ষকের অকারণ ক্রোধপ্রকাশ :
কোনাে কারণে শিক্ষক কোনাে শিক্ষার্থীর উপর অসন্তুষ্ট হলে তার রাগের উদ্রেক হয় । ওই অবস্থায় বিষয় পরিবেশন যথাযথ হয় না , শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের বক্তব্য হৃদয়ংগম করতে পারে না । এতে শিক্ষার্থীরাই বিড়ম্বিত হয় । এ ব্যাপারে সাবধান থাকা জরুরি ।
( ৯ ) শিক্ষকের অস্বস্তি বােধ :
কোনাে কারণে শিক্ষক যদি কোনাে শিক্ষার্থীর জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারেন , তখন তিনি অস্বস্তি বােধ করেন । তাঁকে এই অস্বস্তি বােধ কাটিয়ে পরে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে , এই বলে ছাত্রদের আশ্বস্ত করতে হবে ।