স্বরধ্বনির ভাগ :
🔵 লক্ষ করা গেছে সব স্বরধ্বনি উচ্চারণ করতে একই পরিমাণ সময় লাগে না , কম কিংবা বেশি সময় লাগে । যেমন – ‘ অ ’ উচ্চারণ করতে যতটা সময় লাগে ‘ আ ’ উচ্চারণ করতে তার চেয়ে বেশি সময় লাগে ।
🔵 উচ্চারণে সময়ের কমবেশির হিসাবে স্বরধ্বনিগুলিকে দু – ভাগে ভাগ করা যায় । যথা – হ্রস্বস্বর ও দীর্ঘস্বর ।
🔵 হ্রস্বস্বর ও দীর্ঘস্বর : যে স্বরধ্বনি উচ্চারণ করতে কম সময় লাগে তা হ্রস্বস্বর ( Short Vowels ) । যেমন – অ , ই , উ , ঋ , ৯।
🟢 আর যে স্বরধ্বনি উচ্চারণ করতে অপেক্ষাকৃত বেশি সময় লাগে তা দীর্ঘস্বর ( Long Vowels ) । যেমন — আ , ঈ , ঊ , এ , ও , অ্যা , ঐ , ও , ঔ ।
🟢 ক্ষেত্রবিশেষে হ্রস্বস্বর দীর্ঘ হয়েও উচ্চারিত হয় । যেমন — পথ , বন প্রভৃতি একাক্ষর বা একদলবিশিষ্ট উচ্চারণে ‘ প ’ ও ‘ ব ’ – এর সঙ্গে উচ্চারিত ‘ অ ’ দীর্ঘ হয় । কিন্তু হ্রস্ব – দীর্ঘ উচ্চারণের যে স্বাভাবিক তফাত , বাঙালি – কণ্ঠে তা নেই বললেই চলে । যেমন — ‘ দিনেশ’ ও ‘ দীনেশ ’ শব্দদ্বয়ের ‘ ই ’ ও ‘ ঈ ’ – এর উচ্চারণ একই ।
🟢 প্লুতস্বর ( Intonated vowel ) : স্বরধ্বনির হ্রস্ব ও দীর্ঘ উচ্চারণ ছাড়া আরও একটি উচ্চারণবৈশিষ্ট্য আছে , তা হল স্বরধ্বনিকে অতি দীর্ঘ বা প্রলম্বিত করে উচ্চারণ । যেমন — মা খােকাকে ‘ খােকারে ’ সম্বােধন করে ডাকছে । ‘রে ’ – এর এ ( রে – এ – এ ) প্লুতস্বর । ‘ জয় জয় জয় হে ‘ ( হে – এ – এ ) -র ‘ এ ’ প্লুতস্বর হয়েছে ।
যে স্বরধ্বনিকে টেনে টেনে দীর্ঘ বা প্রলম্বিত করে উচ্চারণ করা হয় , তা প্লুতস্বর ।
গানে , কান্নায় কিংবা দূর থেকে কাউকে ডাকলে প্লতস্বরের সৃষ্টি হয় ।
নিহিত স্বর ( Inherent Vowel ) : আমরা জানি স্বরধ্বনিহীন উচ্চারণ হল ব্যঞ্জন । যেমন — ক , খ , গ , ঘ ইত্যাদি । স্বরধ্বনিহীন উচ্চারণ হল ব্যঞ্জনান্ত বা হলন্ত । ক্ , খ্ , গ্ , ঘ্ ইত্যাদি ব্যঞ্জনান্ত বা হলন্ত উচ্চারণ হয়েছে । সেজন্য হল বা হসন্ত যুক্ত হয়েছে । এই ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে ‘ অ ‘ স্বরধ্বনি যুক্ত হলে উচ্চারণ হয় — ক , খ , গ , ঘ ইত্যাদি । তখন ‘ অ ‘ স্বরধ্বনিকে দেখা যায় না । অ ‘ স্বরধ্বনি ব্যঞ্জনের মধ্যে নিহিত বা স্থাপিত থাকে ।
🌍 ‘ অ ’ হল নিহিত স্বরধ্বনি ।
👉 ব্যঞ্জনধ্বনির মধ্যে নিহিত স্বরধ্বনি হলো নিহত স্বর।