ব্যক্তিগত পার্থক্যের কারণ ( Causes of Individual Difference )

📓 ব্যক্তিগত পার্থক্যের কারণ ( Causes of Individual Difference ) : ব্যক্তিগত পার্থক্যের কারণ হিসেবে মনােবিদগণ দুটি উপাদানের গুরুত্ব দিয়েছেন — বংশধারা ও পরিবেশ । বংশধারা বলতে বােঝায় জিনগত সূত্রে পূর্বপুরুষের মধ্য দিয়ে যে বৈশিষ্ট্য আমরা সহজাত হিসেবে পাই এবং পরিবেশ হল পারিপার্শ্বিক উপাদানের সঙ্গে ব্যক্তির মিথস্ক্রিয়ার ফারণে যে বৈশিষ্ট্য আমরা অর্জন করে থাকি । ব্যক্তিগত পার্থক্যের কারণ একটি বিতর্কিত বিষয় । কোনাে কোনাে মনােবিদ যেমন—

🧾 গ্যালটন ( Galton ) , কার্ল পিয়ারসন ( K. Pearson ) , ডাগডেল ( R. L Digdcle ) প্রমুখ মনােবিজ্ঞানীগণ বংশধারাকেই অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন । অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাঁরা যমজ সন্তানের উপর গবেষণা করে দেখাতে চেয়েছেন যে , মানুষের ক্ষেত্রে বংশধারাই মূল নিয়ন্ত্রক ।পরেশের ভূমিকা খুবই কম ।

🧾বপরীতভাৱে পরিবেবাদীগণ ( যেমন— Cattle , Watson , Easterbrook , Barbara Burka ) পরীক্ষা করে দোখাতে চেয়েছেন যে বংশধারা নয় পরিবেশের প্রভাবেই ব্যক্তির ক্ষেত্রে তারতম্য ঘটে।

🧾এই বিতর্কিত বিষয়ের উপর বহু সমীক্ষা ও গবেষণা করে অধিকাংশ মনােবিদ , সমাজতত্ত্ববিদ শিক্ষাবিদ এবং জৈব বিশারদগণ বর্তমানে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে , কোনাে উপাদান বংশধারা কী পরিবেশ ব্যক্তিগত পার্থক্যে এককভাবে দায়ী নয় । উভয়ের ভূমিকাই গুরুত্বপূর্ণ । এ সম্পর্কে মনােবিজ্ঞানী উডওয়ার্থ ( Woodworth) বলেন , একটি চতুর্ভুজকে যদি ব্যক্তিসত্বা হিসেবে মনে করা যায় তাহলে তার একটি দিক হবে একটি বাহু ধরা যাক প্রস্থ আর অপর বাহুটি হল দৈর্ঘ্য । চতুর্ভুজ যেমন দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের গুণফল তেমনি ব্যক্তিত্ব হল বংশধারা ও পরিবেশের গুণফল । বংশধারা বা পরিবেশ একক ভাবে সক্রিয় হতে পারে না ।

🧾 বর্তমানে কোনাে কোনাে মনােবিদগণের মধ্যে , এই বিতর্ক থাকলেও তা অনেক হ্রাস । পেয়েছে । এবং স্বীকার করা হয়েছে মানুষের প্রায় সব কিছু বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বংশধারা ও পরিবেশ উভয়ই সমভাবে দায়ী । তবে যেহেতু বংশধারা পরিবর্তনে এখনাে কোনাে উপায় বা কৌশল আবিষ্কার হয়নি তাই শিক্ষার ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ রচনা করা শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষকের প্রধান দায়িত্ব । অর্থাৎ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা প্রয়ােজন ।