বাংলা পেডাগোজি – কীভাবে হাতের লেখা শেখানাে হবে

“■ কীভাবে হাতের লেখা শেখানাে হবে :

● একেবারে প্রথম পর্যায়ে ছাত্রদের খেয়ালখুশিমতাে হিজিবিজি আঁকতে দেবার সুযােগ দিতে হবে । ক্রমশ এটা ওটা হিজিবিজি লিখতে লিখতে হাতের আঙুলের পেশিগুলাে নমনীয় বা বলিষ্ঠ হবে । কলম ধরার ব্যাপারটা আয়ত্তে আসবে ।

● এরপর স্লেটে কয়েকটি বর্ণ লিখে দিয়ে তার উপর লিখতে বা মকশাে দিতে বলতে হবে । প্রথমটা এদিক – সেদিক হবে — তাতে রাগ বা বিরক্তি ভাব দেখানাে চলবে না । অনুশীলনের মাধ্যমে সেগুলি ঠিক হয়ে যাবে ।

● পরবর্তী স্তরে বিভিন্ন বর্ণের চার্ট দেখে বা বইতে যেসব বর্ণ আছে তা লিখতে দিতে হবে । বারবার লিখতে লিখতে একসময় তাকে ওই নির্দিষ্ট ছাঁচটির কাছাকাছি যাবে । আর কীভাবে অক্ষরটি লিখতে হবে , কোন্ দিকে আঙুল ঘােরাতে হবে , তা প্রথম দিকে হাতে ধরিয়ে অভ্যাস করাতে হবে । এ ব্যাপারে তাদের যথেষ্ট উৎসাহিত করতে হবে , যাতে তারা আরও ভালােভাবে তা লিখতে পারে ।

● যুক্তাক্ষর শেখানাে হবে আরও পরবর্তী পর্যায়ে । বর্ণ লেখার পর , তারা ছােটো ছােটো শব্দ লিখতে পারবে । প্রথম দিকে যুক্তাক্ষরহীন শব্দ ও পরবর্তী স্তরে যুক্তবর্ণ দিয়ে শব্দ লেখানাে দরকার ।

● এই প্রসঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর দেওয়া জরুরি । সেগুলি নিচে আলোচনা করলাম ।

১। শিক্ষার্থীদের মাত্রা দিয়ে লেখার ব্যাপারটা জানিয়ে দিতে হবে ।

২। স্বরবর্ণ , ব্যঞ্জনবর্ণ ও যুক্তবর্ণের কোথায় কোথায় মাত্রা হয় না তা শিক্ষক মহাশয় জানিয়ে দেবেন ।
এ , ও , খ , গ , ঙ , ঞ , ণ , থ , ধ , প , শ , ৎ

৩। কার বা ধ্বনি চিহ্ন সম্পর্কে জানাতে হবে –
া — আ – কার ।
ি— হ্রস্ব – ই – কার ।
ী — দীর্ঘ – ঈ – কার ।
ু — হ্রস্ব – উ – কার ।
ূ — দীর্ঘ – ঊ – কার ।
ৃ — ঋ – কার ।
ে — এ – কার ।
ৈ — ঐ – কার ।
ো — ও – কার ।
ৌ — ঔ – কার ।

৪। ফলার ব্যবহার ;
ণ- ফলা – অপরাহ্ন
ম – ফলা – যুগ্ম
ন – ফলা – যত্ন , রত্ন
র – ফলা – প্রাণ , ত্রাণ
ব – ফলা – অন্বয় , বিদ্বান
ল – ফলা – অম্ল
য – ফলা – সত্য

৫। যুক্তবর্ণগুলির ছাঁচ বা Style বিশেষরূপে শিখিয়ে দেবেন ।

৬। টেবিলের ওপর ঠিকমতাে কাগজ রাখা , কলম বা পেনসিল ঠিকমতাে ধরা , সঠিক ভঙ্গিতে বসা , পেনসিল বা কাগজকে চোখ থেকে এক ফুট দূরত্বে রাখা , সঠিকভাবে হাত ও আঙুলকে সঞ্চালন করানাের অভ্যাস তৈরি করাতে হবে ।

৭। খাতার ওপরে ও বাঁ দিকে যথাযথ মার্জিন রেখে যেন ছেলেমেয়েরা লেখার মাধ্যমে অভ্যাস করে তা দেখতে হবে ।

৮। বারবার রাবার ঘসে কাগজ বা খাতা না ছিঁড়ে ফেলে তা দেখতে হবে ।

৯। অক্ষরগুলাে যাতে ঠিকঠাক লেখে তা সচেতনভাবে দেখতে হবে ।

১০। কোনাে কঠিন অক্ষর লিখতে না পারলে ভালাে করে দেখিয়ে দিতে হবে ।

১১। শিক্ষক / শিক্ষিকা বর্ণগুলির উচ্চারণ যথাযথ শােনাবেন ।
যেমন—
হ্রস্ব – ই ,
দীর্ঘ – ঈ ,
হ্রস্ব – উ ,
দীর্ঘ – ঊ ,
তালব্য – শ ,
দন্ত্য – স,
মূর্ধন্য – য ,
বর্গীয় – জ ,
অন্তঃস্থ – য ,
ঙ ( উয়োঁ ) ,
ঞ ( ইয়োঁ ) প্রভৃতি ।

১২। সর্বোপরি কোনাে ভয় না দেখিয়ে বা শাসন না করে এইগুলাে ধৈর্য ধরে শেখাতে হবে ।

১৩। নিম্নশ্রেণিতে অনুলিখনের ব্যবস্থাও বেশ উপযােগী ।

Related posts:

পদার্থ কাকে বলে ? পদার্থ ও বস্তু কি এক ?
প্রশ্ন : মূল্যায়ন কাকে বলে ? মূল্যায়ন কয় প্রকার ও কী কী ? যে - কোনো একপ্রকার মূল্যায়নের বিবরণ দি...
একক পাঠ পরিকল্পনা কাকে বলে ? পাঠ পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা লিখুন । এর সুবিধা লিখুন ।
শিক্ষা পরিকল্পনা কাকে বলে ? শিক্ষা পরিকল্পনার শ্রেণিবিভাগ করুন । যেকোনো একপ্রকার পরিকল্পনার বিবরণ দি...
ধারণা মানচিত্র কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্য লিখুন । বাস্তবায়নের উপায় লিখুন । এর গুরুত্ব লিখুন ।
পাঠ একক বিশ্লেষণ কাকে বলে ? পাঠ একক বিশ্লেষণের স্তর বা ধাপগুলি লিখুন
অন্তর্ভুক্তিকরণে ( সমন্বিত শিখনে ) প্রদর্শিত শিল্পকলার কীভাবে প্রয়োগ করবেন
প্রদর্শিত শিল্পকলার লক্ষ্য , বৈশিষ্ট্য , গুরুত্ব ও বাস্তবায়নের কৌশল
প্রাথমিক স্তরে পাঠদানের ক্ষেত্রে নাটকের ব্যবহার
মূল্যবোধ শিক্ষায় বিদ্যালয় ও শিক্ষকের ভূমিকা
মূল্যবোধ || মূল্যবোধের বৈশিষ্ট্য || প্রাথমিক স্তরে মূল্যবোধের শিক্ষার গুরুত্ব
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষায় তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ভূমিকা
সমন্বয়িত শিক্ষণে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সমস্যা ও সাফল্য
পাঠক্রম পরিব্যাপ্ত শিক্ষণবিজ্ঞানে তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ব্যবহার
পাঠক্রম পরিব্যাপ্ত শিক্ষণবিজ্ঞানে তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ব্যবহার
উদাহরণসহ প্রকল্প পদ্ধতির বিবরণ
পূর্বসূত্রজনিত শিখন ( Contextualization ) কাকে বলে ?
জ্ঞান , পাঠক্রম , পাঠ্যবই , শিক্ষার্থী ও শিক্ষণবিজ্ঞানের মধ্যের সম্পর্ক
অনুসন্ধান পদ্ধতি
জ্ঞান নির্মাণ কীভাবে হয় উদাহরণসহ আলোচনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page