⏹ পরিবেশ কাকে বলে ?
উদ্ভিদ , প্রাণী ও মানুষের সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার দরকার হয় , তাকে পরিবেশ বলে ।
🔮 পরিবেশ তৈরি হতে দরকার লাগে জল , বাতাস , মাটি , উদ্ভিদ , প্রাণী ও মানুষ ।
🔔 বিজ্ঞানীরা পরিবেশের নানা সংজ্ঞা দিয়েছেন । তাদের বলার ধরন আলাদা হলেও , মূল কথাটির মধ্যে কোনাে তফাত নেই । নীচে পরিবেশের কয়েকটি সংজ্ঞা দেওয়া হল —
( 1 ) ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রােগ্রাম ( 1976 ) -এ দেওয়া সংজ্ঞা অনুসারে —
“ পরিবেশ বলতে পরস্পর ক্রিয়াশীল উপাদানগুলির মাধ্যমে গড়ে ওঠা সেই প্রাকৃতিক ও জীবমণ্ডলীয় প্রণালীকে বােঝায় যার মধ্যে মানুষ ও অন্যান্য সজীব উপাদানগুলি বেঁচে থাকে , বসবাস করে। “”
( 2 ) পরিবেশ বিজ্ঞানী বটকিন এবং কেলার , তাদের “”এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ” নামক গ্রন্থে বলেছেন – “” জীব , উদ্ভিদ বা প্রাণী তাদের জীবনচক্রের যে-কোনাে সময়ে যে সমস্ত জৈব এবং অজৈব কারণগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয় , সেই কারণগুলির সমষ্টিকে পরিবেশ বলে ।””
[ জৈব কারণ , যেমন— কার্বোহাইড্রেট , প্রােটিন , ফ্যাট ; অজৈৱ কারণ , যেমন— মাটি , বাতাস , সূর্যালােক । ]
( 3 ) জীবনবিজ্ঞানী ওডাম , তার “”ফান্ডামেন্টালস অব ইকোলজি ” নামক গ্রন্থে পরিবেশের সংজ্ঞায় বলেছেন যে , পারিপার্শ্বিক অবস্থার যে উপাদান , কারণ ও লক্ষণগুলি সামগ্রিকভাবে জীব ও জীব সম্প্রদায়ের কাজকর্ম ও উন্নয়নকে প্রভাবিত করে , তাকে পরিবেশ বলে।
( 4 ) দ্য কনসাইজ্ অক্সফোর্ড ডিকশনারিতে পরিবেশ ( Environment ) – কে বর্ণনা করতে গিয়ে বলা হয়েছে যে , –
“ পরিবেশ হল উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের ওপর প্রভাব বিস্তারকারী বহিরঙ্গের অবস্থাগুলির সমষ্টি । “”
[ এখানে বহিরঙ্গের অবস্থা হল চারপাশের অবস্থা। সুতরাং উদ্ভিদ , প্রাণী ও মানুষ তার চারপাশের যে অবস্থার মধ্যে সুস্থ , স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকে সেই জৈব এবং অজৈব কারণের সমাহার হল পরিবেশ । ]
( 5 ) আর্থ – সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবেশ হল সেই সমস্ত প্রাকৃতিক , সামাজিক , অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা যা মানুষকে যে – কোনাে জায়গায় , যে – কোনাে সময়ে প্রভাবিত করে । যেমন , জিনিসের দাম বাড়লে মানুষের কষ্ট বাড়ে । যুদ্ধ – বিগ্রহ – দাঙ্গা হলে লােকের দুঃখ – দুর্দশা বাড়ে । এখানে মূল্যবৃদ্ধি , যুদ্ধ – বিগ্রহ প্রভৃতি হল অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের উদাহরণ ।