“✳️ Growth, Development, Maturation (বৃদ্ধি, বিকাশ ও পরিনমন ) ✳️
⏹ শিখনের ভিত্তি হিসেবে বিকাশ :
শিখনের প্রধান দুটি উপাদান হল বৃদ্ধি ও বিকাশ। শিখনের ভিত্তি হিসেবে বিকাশ সম্পর্কে আলোচনা করতে হলে প্রথমেই জানা প্রয়োজন বৃদ্ধি ও বিকাশের অর্থ।
⏹ বৃদ্ধি ও বিকাশের অর্থ :
ব্যক্তিজীবনের মূল লক্ষ্য হল পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজন। পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনে যে তিনটি উপাদানের বিশেষ ভূমিকা দেখা যায়, তা হল —
⭐️ বৃদ্ধি, বিকাশ ও পরিনমন।
Arnold Jones – এর মতে, দেহের উচ্চতা ও ওজন বেড়ে যাওয়াকে বৃদ্ধি বলে; যেমন – শিশুর উচ্চতা বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি, হাতের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, শিক্ষা ও মনস্তত্ত্বে বৃদ্ধির ধারণা শুধুমাত্র আকার ও আয়তনে বৃদ্ধি বোঝায় না, এটি পরিণমনের অন্তর্ভুক্ত।
⭐️ পরিনমন হল কোন কিছু করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত স্তরে উপনীত হওয়া, যেমন হাঁটার জন্য পায়ের মাংসপেশিগুলি উপযুক্ত পরিমাণে শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন।
⭐️ বিকাশ হল প্রার্থীর মধ্যে ক্রমপরিবর্তন যা শুধুমাত্র শারীরিক পরিবর্তনের সীমাবদ্ধ থাকে না।
⭐️ বিকাশে ক্রিয়াগত পরিবর্তন আবশ্যিক শর্ত। যেমন কোনো কিছু করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া, নির্ভুলভাবে কর্ম সম্পাদন করতে পারা ইত্যাদি।
⭐️ বিকাশ অবশ্যই বৃদ্ধির ফলে সম্ভব, কিন্তু বৃদ্ধি বিকাশ নয়।
⭐️ একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। একটি প্রতিবন্ধী শিশু যার পায়ের ত্রুটির ফলে সে হাঁটতে পারে না। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তার পায়ের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পাবে কিন্তু পায়ের কার্যকারিতার পরিবর্তন হবে না অর্থাৎ সুষ্ঠুভাবে হাঁটতে পারবে না। এক্ষেত্রে বলা যাবে যে শিশুটির পায়ের বৃদ্ধি হয়েছে কিন্তু বিকাশ হয়নি।
⭐️ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ক্রিয়াগত পরিবর্তনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয় না কিন্তু বিকাশের ক্ষেত্রে ধনাত্মক ক্রিয়াগত পরিবর্তন আবশ্যক।
⏹ বৃদ্ধির বৈশিষ্ট্য ও নীতি এবং শিক্ষাগত তাৎপর্য :
☢️ বংশধারা ও পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার ফলেই বৃদ্ধি ঘটে। অনেক মনোবিদ মনে করেন, বৃদ্ধির উপর বংশধারার প্রভাব অধিক। আবার অনেকের মত হল পরিবেশের কারণেই বৃদ্ধি ঘটে । অধিকাংশ মনোবিদ অবশ্য মনে করেন বৃদ্ধি বংশধারা ও পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার ফল । কার প্রভাব বেশি বা কম অবান্তর প্রশ্ন । শিক্ষকের কাজ হল, এমন পরিবেশ রচনা করা যা মিথস্ক্রিয়াকে উৎসাহিত করে এবং বৃদ্ধিকে সার্থক করে তোলে।
☢️ বিভিন্ন বয়সে বৃদ্ধির হার বিভিন্ন । H. V. Meredith বৃদ্ধির হারের উপর Longitudinal অধ্যায়ন করেছেন। ( Longitudinal বা লম্ব অধ্যয়ন পদ্ধতি বলতে বোঝায় একই শিশু বা শিশুদলকে দীর্ঘ সময়ব্যাপী অধ্যায়ন করা) । Meredith অধ্যায়ন করে দেখেছেন —
1) জন্ম থেকে 2 – 2.5 বছর পর্যন্ত বৃদ্ধির হার খুব বেশি।
2) 2.5 বছর থেকে বয়ঃসন্ধিক্ষণের 2 বছর পূর্ব পর্যন্ত বৃদ্ধির হার হ্রাস পায়।
3) বয়ঃসন্ধিক্ষণের কিছু পূর্ব থেকেই বৃদ্ধির হার পুনরায় দ্রুত ঘটে।
4) বয়ঃসন্ধিক্ষণের পরে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধির হার হ্রাস পায়।
শিক্ষার ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির হারের তাৎপর্য হল — প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকগণ দ্রুত বৃদ্ধির স্বার্থে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্য এবং অনুশীলনের ব্যবস্থা করবেন। শিক্ষা এবং সমাজের অন্যান্য উপাদানগুলির প্রতি উপযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে শিক্ষক ছাত্রদের প্রতি বিশেষ নজর দেবেন এবং বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করবেন।
☢️ বৃদ্ধি ও অনুশীলন : বৃদ্ধির উপর অনুশীলনের প্রভাব সম্পর্কিত একাধিক পরীক্ষা হয়েছে এবং ধনাত্মক প্রভাব এর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
উপযুক্ত বৃদ্ধির জন্য শিক্ষকগণ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের ব্যবস্থা করবেন।
☢️ শিশুদের মধ্যে বৃদ্ধির হারে পার্থক্য দেখা যায় :
কিছু শিশু দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পায় এবং কোন কোন শিশুর বৃদ্ধি শ্লথ গতিতে হয়। এ যেন কেউ গরুর গাড়িতে চড়ে ভ্রমণ করে, আবার কেউ ভ্রমণ করে জেট বিমানে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা পরিকল্পনা রচনা করবেন।
☢️ ব্যক্তিভেদে বৃদ্ধির সমাহার সাধারণভাবে বজায় থাকে। যে শিশু বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অন্যান্যদের থেকে এগিয়ে থাকে, সারা জীবনেই সে এগিয়ে থাকে। শিক্ষক শিক্ষার্থীর জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা কর্মসূচি পরিকল্পনায় বৃদ্ধির এই বৈশিষ্ট্যের ওপর গুরুত্ব দেবেন। সকলের জন্য একই কর্মসূচি সুপারিশ করা শিক্ষা মনোবিজ্ঞানসম্মত নয়।
☢️ একটা স্তর পর্যন্ত বৃদ্ধি নিরবচ্ছিন্ন এবং ধারাবাহিক : বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই বৈশিষ্ট্যটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আবার একই সঙ্গে অসুবিধাজনক। শিশুর বৃদ্ধি নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘটে। বয়স ভেদে বৃদ্ধির হারের পরিবর্তন ঘটতে পারে কিন্তু কোনো বয়সে থেমে গিয়ে আবার শুরু হয় এমনটি ঘটে না। তাই বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিকতা একটি অন্যতম শর্ত। শিক্ষাক্ষেত্রে এটি তাৎপর্যপূর্ণ এই অর্থে যে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অসুবিধাজনক এই অর্থে যে বৃদ্ধি নিরবচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক হওয়ার জন্য স্তরভিত্তিক ভাগ করা বিজ্ঞানসম্মত হয় না।
⏹ বিকাশের ধারণা, বৈশিষ্ট্য ও নীতি :
☢️ বিকাশ হল একটি প্রক্রিয়া যা ব্যক্তির ক্ষমতার সূচনা বা বৃদ্ধি করে এবং যা ব্যক্তিকে উৎকর্ষতার সঙ্গে কার্যসম্পাদনে সাহায্য করে। যেমন — সঞ্চালন ক্ষমতা বিকাশের ফলে শিশু ‘হাটি-হাটি’ — ‘পা-পা’ থেকে সচ্ছন্দে দৌড়াতে পারে। মনে রাখা প্রয়োজন বিকাশ বৃদ্ধির ফলেই ঘটে। আরো স্পষ্ট করে বলা যায়, বৃদ্ধি বিকাশের রূপ নেয়, যখন ওই বৃদ্ধি ব্যক্তির কার্য সম্পাদনে উৎকর্ষতা আনে। বিকাশকে আরো অর্থবহ করে তুলতে এর কয়েকটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হল।
☢️ শিখনের ফলে বিকাশ : Bayer – এর মতে, আচরণের পরিবর্তন বা শিখনের ফলে বিকাশ ঘটে। এই আচরণের পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পনা প্রয়োজন। এখানে পরিকল্পনা বলতে বোঝায় ব্যক্তিজীবনে শিখনের বিন্যাস। পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার ফলে শিশু যে শিখন অভিজ্ঞতাগুলি অর্জন করে তারই ক্রমান্বয় হল বিকাশ।
☢️ বিকাশ হল সংশ্লেষণ : কোনো কোনো মনোবিজ্ঞানী বিকাশকে পরিণমন বা শিখনের ফল হিসাবে বিবেচনা করতে অস্বীকার করেছেন। তাঁদের মতে, এই দুটি ব্যাখ্যাই বিকাশকে নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া হিসাবে দেখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পিয়াঁজে বলেন, কোনো কোনো মনোবিদ বিকাশকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নির্দিষ্ট শিখন অভিজ্ঞতাগুলির সমম্বয় বলে মনে করেছেন। প্রকৃতপক্ষে বিকাশ হল একটি প্রক্রিয়া। প্রতিটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বা একক শিখন সামগ্রিক বিকাশকে কার্যকরী করে তোলে। তবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র একক শিখনের সমম্বয় হল বিকাশ, এ ধারণা সঠিক নয়। পিয়াঁজের মতে বিকাশের চারটি প্রক্রিয়া আছে। এগুলি হল —
ক) পরিনমন
খ) অভিজ্ঞতা
গ) মানসিক যোগাযোগ এবং
ঘ) ভারসাম্যকরণ
☢️ বিকাশ একটি নিরবচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া — মাতৃগর্ভ থেকে আমৃত্যু বিকাশ ঘটে। যদিও এর হার সবসময়ই স্থির থাকে না। হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে।
☢️ ব্যক্তির বিভিন্ন বিকাশগুলি পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। ব্যক্তির দৈহিক বিকাশ, মানসিক বিকাশ, সামাজিক বিকাশ, প্রাক্ষোভিক বিকাশ পৃথকভাবে ঘটে না। পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং পরস্পর নির্ভরশীল।
☢️ বিকাশ একটি ব্যক্তিগত প্রক্রিয়া। ব্যক্তিসকলের বিকাশে অসমতা পরিলক্ষিত হয়। দৈহিক, মানসিক, সামাজিক প্রভৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পার্থক্য শুধু ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে নয়, একই ব্যক্তির বিভিন্ন বয়সের বিভিন্ন হারে বিকাশ ঘটে।
☢️ বিকাশ সামগ্রিক থেকে বিশেষ এর দিকে ঘটে : প্রতিটি বিকাশে সামগ্রিক থেকে বিশেষ এর দিকে ঘটে। শিশু যখন কিছু ধরার চেষ্টা করে তখন সমস্ত হাতকেই সে ব্যবহার করে। পরে হাতের সমস্ত আঙুলগুলি ব্যবহার করে এবং অবশেষে দুটি বা তিনটি আঙ্গুল দিয়েই ধরতে পারে।
☢️ বিকাশে লিঙ্গগত পার্থক্য দেখা যায় : স্ত্রী পুরুষের মধ্যে বিকাশের পার্থক্য আছে। বালিকারা বালকদের থেকে অনেক আগেই পরিনত হয়। বালিকাদের বয়ঃসন্ধিক্ষন বালকদের থেকে অনেক পূর্বে আসে।
☢️ বিকাশের নীতি : বিকাশের প্রধান নীতিগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল –
i) বিকাশ হল মিথস্ক্রিয়ার ফল।
ii) বংশগতি ও পরিবেশের মিথস্ক্রিয়ার ফলেই বিকাশ ঘটে।
iii) বিকাশ ধারাবাহিকতা মেনে চলে।
iv) বিকাশ উপর দিকে (মস্তিষ্ক ) শুরু হয়ে নিচের দিকে ঘটে।
v) বিকাশ কেন্দ্র থেকে পরিধির দিকে অগ্রসর হয়।
vi) বিকাশের ফলে যে চলন ঘটে তার ধারাবাহিকতা বিশ্বের সব শিশুর ক্ষেত্রেই দেখা যায় যেমন হামাগুড়ি, দাঁড়ানো, হাঁটা।
vii) বিকাশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।
viii) ভবিষ্যৎবাণীর নীতি
ix) সরল রৈখিক বনাম স্পাইরাল নীতি।
⏹ বৃদ্ধি ও বিকাশের মধ্যে পার্থক্য :
বৃদ্ধি ও বিকাশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং নির্ভরশীল হলেও উভয় প্রক্রিয়ার মধ্যে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
⏺ বৃদ্ধি : আকার ও আয়তনের বেড়ে যাওয়াকে বৃদ্ধি বলে।
⏺ বিকাশ : আকার ও আয়তনের বৃদ্ধির সঙ্গে সক্রিয়তা এবং কার্য সম্পাদনে উৎকর্ষতা বিকাশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
⏺ বৃদ্ধি : বৃদ্ধি হলো কারণ।
⏺ বিকাশ : বিকাশ তার ফল।
⏺ বৃদ্ধি : বৃদ্ধির ধারণা কেবল দৈহিক বা শরীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
⏺ বিকাশ : বিকাশের ধারনা দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক সবই অন্তর্ভুক্ত।
⏺ বৃদ্ধি : বৃদ্ধি স্বতঃস্ফূর্ত, তবে অনুশীলনের প্রভাব দেখা যায়।
⏺ বিকাশ : পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার ফলেই বিকাশ ঘটে থাকে অর্থাৎ ব্যক্তির সক্রিয়তা এবং অনুশীলন এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।
⏺ বৃদ্ধি : বৃদ্ধি অনুশীলন ‘বিশেষ’ ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট। যেমন হাতের পেশির ব্যায়াম করলে হাতের পেশির বৃদ্ধি হবে । পায়ের পেশির ওপর এর প্রভাব নেই।
⏺ বিকাশ : বিকাশ সামগ্রিক। মানসিক বিকাশের চর্চা করলে তার প্রতিফলন সামাজিক, প্রাক্ষোভিক বিকাশের উপরে দেখা যায়।
⏺ বৃদ্ধি : বৃদ্ধি একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত ঘটে।
⏺ বিকাশ : বিকাশ আমৃত্যু ঘটে।
⏺ বৃদ্ধি : বৃদ্ধি পরিমাপযোগ্য।
⏺ বিকাশ : বিকাশ পর্যবেক্ষণ -সাপেক্ষ।
⏺ বৃদ্ধি : বৃদ্ধি পরিমাণগত।
⏺ বিকাশ : বিকাশ গুণগত।
⏺ বৃদ্ধি : শিক্ষা বৃদ্ধির পরিমানকে প্রভাবিত করলেও তা বাঞ্ছিত কিনা সে ব্যাপারে শিক্ষা মনোবিদদের মধ্যে মতভেদ আছে।
⏺ বিকাশ : শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হল ব্যক্তির পূর্ণ বিকাশ।
💠 পরিণমন ( Maturatios ) :
পরিণমন বলতে বােঝায় শারীরিক বিকাশ , বিশেষ করে পেশি ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ।
🛡 পরিণমনের ধারণা ( Concept of Maturation ) :
🏵 পরিনমন হলো একটি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া, যেখানে কিছু শক্তিশালী উপাদান শিশুর বিকাশের প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, এই উপাদান গুলির বেশির ভাগই সহজাত।
🏵 আমি পরিনমন এর একটি উদাহরণ দিচ্ছি আপনাদের সুবিধার্থে ; ধরুন একটি বাচ্চার গলার আওয়াজ ছোটো অবস্থায় যা থাকে বড়ো হওয়ার সাথে সাথে তার পরিবর্তন ঘটতে থাকে এবং এক সময় তা প্রাপ্ত বয়স্কের মতো শোনায়।
এই ঘটনায় দেখা যাচ্ছে যদি বাচ্চাটিকে নিজের মতো করে ছেড়ে দেওয়া হতো তাহলেও কিন্তু বাচ্চার গলার আওয়াজ আপনা-আপনি চেঞ্জ হত। এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে পরিনমণ এর জন্য কোনরকম প্রশিক্ষণ অথবা অনুশীলন অথবা অভ্যাস এর প্রয়োজন হয় না। পরিনমন হল মানব জীবনের একটি সাধারণ প্রক্রিয়া যা আপনা আপনি ঘটতে থাকে।
পরিণমনের আরেকটি উদাহরণ হলো শরীরের মাংসপেশি এর গঠন। যা বয়স বাড়ার সাথে সাথে আপনা আপনি সুগঠিত হতে থাকে। অর্থাৎ আমরা বলতে পারি —
🏵 পরিনমন হলো শিক্ষার্থীর আচরণের গুনগত এবং পরিমানগত পরিবর্তনের প্রক্রিয়া যা প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন নিরপেক্ষ। অর্থাৎ পরিনমন হল শিখন নিরপেক্ষ এবং মানব জীবনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।