ধীরগতিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শনাক্তকরণ

📔 ধীরগতিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শনাক্তকরণ ( Identification of Slow Learner ) :

📜 যে – কোনাে শ্রেণিকক্ষে কিছু সংখ্যক ধীরগতিসম্পন্ন শিক্ষার্থী সাধারণভাবেই থাকে । এদের সমস্যার সঠিক পরিপূরণ না হলে এরা শিক্ষাক্ষেত্রে অপচয়ের শিকার হয় । তাই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে এদের দ্রুত শনাক্তকরণ প্রয়ােজন । এক্ষেত্রে সমস্যা হল অন্যান্য শারীরিক প্রতিবন্ধিতার মতাে সহজ কোনাে বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে এদের শনাক্ত করা যায় না । মূলত শ্রেণিকক্ষে এদের কিছু আচরণ এবং শিক্ষাগত দক্ষতা পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে এদের চিহ্নিত করা হয় । বর্তমানে মনােবিদ্যার বিশেষ কয়েকটি পদ্ধতি প্রয়ােগের সাহায্যে এদের শনাক্তকরণের প্রচেষ্টা চলছে । এরূপ কয়েকটি পদ্ধতি নিম্নরূপ :

📜 ( 1 ) পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি : সহজ এবং নিয়ন্ত্রণযােগ্য কিছু পরিস্থিতিতে শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞ মনােবিদ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আচরণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ধীরগতিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শনাক্তকরণের চেষ্টা করা হয় । এই পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার সময় এবং ধরন বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে আসা হয় ।

📜 ( 2 ) কেস স্টাডি : এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী এবং তার পরিবারের সদস্যদের অতীত ইতিহাস বিশ্লেষণ করে তার সমস্যার কারণ খোঁজার চেষ্টা হয় । বলা বাহুল্য এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক পদ্ধতি ।

📜 ( 3 ) ডাক্তারি পরীক্ষা : পর্যবেক্ষণ ও কেস স্টাডি পদ্ধতির মাধ্যমে কোনাে শিক্ষার্থীকে ধীরগতিসম্পন্ন বলে মনে হলে , সেভাবে তাকে নির্দিষ্ট করার আগে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়ােজন । সেই চিকিৎসক প্রয়ােজনীয় সবরকম পরীক্ষা করবেন।

📜 ( 4 ) বিদ্যালয়ের পরীক্ষা : বিদ্যালয়ে সংঘটিত বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর ঘাটতি বা দুর্বলতা খুঁজে বের করা যায় । পাঠক্রমের অন্তর্গত বিভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষার ফলাফলের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ধীরগতিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করা যায় ।

📜 ( 5 ) ব্যক্তিসত্তার অভীক্ষা : আধুনিক যুগে মনােবিজ্ঞানীরা ধীরগতিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করার জন্য ব্যক্তিসত্তার বিভিন্ন অভীক্ষা প্রয়ােগ করে থাকেন । কারণ গবেষণায় দেখা গেছে ব্যক্তিসত্তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য যেমন — মনােযােগ , প্রক্ষোভের স্থিরতা , জেদি মনােভাব , কোনাে বিষয়ের চিন্তায় আটকে থাকা ইত্যাদি শিক্ষাক্ষেত্রে ধীরগতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত ।

📜 ( 6 ) বুদ্ধির অভীক্ষা : প্রচলিত বুদ্ধির অভীক্ষার সাহায্যেও ধীরগতিসম্পন্ন শিশুদের শনাক্ত করা যায় । এ ক্ষেত্রে মনােবিদগণ দলগত ভাষা অভীক্ষার চেয়ে ব্যক্তিগত ভাযা অভীক্ষাকেই বেশি গুরুত্ব দেন । তবে কোনাে একটি অভীক্ষায় প্রাপ্ত ফলের সাহায্যে কোনাে শিক্ষার্থীকে ধীরগতিসম্পন্ন চিহ্নিত না করে বিকল্প অভীক্ষার মাধ্যমেও নিশ্চিত হওয়ার কথা বলেন ।

📜 ( 7 ) মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা : তুলনায় আরও ভালােভাবে নিশ্চিত হবার জন্য নির্দিষ্ট আচরণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন সংবেদনশীল মনােবৈজ্ঞানিক অভীক্ষা প্রয়ােগের মাধ্যমে ধীরগতিসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায় । এই সমস্ত অভীক্ষায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন আচরণ , যেমন — মনােযােগ , প্রত্যক্ষণ , দৃঢ়চিত্ততা , স্মৃতি , যুক্তি প্রয়ােগের ক্ষমতা বিশ্লেষণ করা হয় ।