বিচ্ছিন্নকরণের নীতি

📜 গেস্টন্টবাদী মনােবিদগণ অন্তর্দৃষ্টি জাগানাের জন্য দুটি মানসিক প্রক্রিয়ার উপর জোর দিয়েছেন । এদুটি হল সামান্যীকরণ ও পৃথকীকরণ । শিখন পরিস্থিতির মধ্যে যেগুলি অপ্রাসঙ্গিক সেগুলিকে বাদ দিয়ে কেবলমাত্র প্রাসঙ্গিক ও সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলিকে বেছে নেওয়ার নামই হল পৃথকীকরণ ( differentiation ) এবং পরে ওই সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলির উপর ভিত্তি করে কোনাে সামান্যধর্মী সূত্র তৈরি করার নাম হল সামান্যীকরণ ( integration ) । জীবনবিকাশের মূলেও এই দুটি প্রক্রিয়া কাজ করে । তাই গেস্টল্ট – তত্ত্ব অনুযায়ী শিখন হল জীবনবিকাশের একটি অঙ্গ ।

📜 গেস্টল্টবাদীরা সংগঠিত বা সামগ্রিক প্রত্যক্ষণের কয়েকটি নীতির কথা বলেছেন —

( 1 ) বিচ্ছিন্নকরণের নীতি : সংগঠনকে প্রত্যক্ষ করতে হলে প্রথমে আমরা বস্তুগুলিকে মূল সংগঠন থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিই । যেমন আকাশে অসংখ্য তারা রয়েছে সুতরাং আকাশ নামক সংগঠন থেকে বিশেষ কয়েকটি তারাকে আলাদা করে আমরা কালপুরুষ , সপ্তর্ষিমণ্ডল ইত্যাদিকে প্রত্যক্ষ করি ।

( 2 ) সাদৃশ্যের নীতি : সদৃশ বিষয় বা বস্তু বা ধারণাগুলিকে সহজেই আমরা সংগঠিত করতে পারি । যেমন –বিচ্ছিন্ন শব্দ , সংখ্যা বা বস্তু অপেক্ষা সদৃশ শব্দ , সংখ্যা এবং বস্তুকে সহজেই একত্র করতে পারি এবং মনে রাখতে পারি ।

( 3 ) নৈকট্যের নীতি : যেসব বিষয় বা বস্তু বা ধারণা স্থানগত এবং সময়ের প্রেক্ষিতে কাছাকাছি থাকে সেগুলিকে অনেক সহজে সংগঠিত করা যায় ।

( 4 ) ধারাবাহিকতার নীতি : যে বিষয় বা বস্তু বা ধারণার মধ্যে ধারাবাহিকতা দেখা যায় তাদেরকে সহজেই সংগঠিত করা যায় ।

( 5 ) পরিমিতির নীতি : পূর্বাৰ্জিত শিখনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখলে বিভিন্ন বিষয়ের সংগঠন অতি সহজ হয় । যেমন–বৃত্তের ব্যাস , ব্যাসার্ধ , পরিসীমা জানা থাকলে পরবর্তী ক্ষেত্রে বৃত্তের ক্ষেত্রফলের ধারণা দেওয়া অনেক সহজ হয় । কারণ পূৰ্বার্জিত ওই বিষয়গুলিকে কাজে লাগিয়েই বিষয়টিকে শেখানাে হয় ।