“⭐ মৌলিক শব্দ : তৎসম শব্দ ⭐
● ‘ মূল ’ শব্দ থেকে মৌলিক শব্দের উৎপত্তি ।
● এখানে মৌলিক শব্দ বলতে ভাষার মূল বুনিয়াদ বা ভিত গড়ে যে সকল শব্দ সেগুলোকে বোঝায়।
● বাংলা ভাষার বুনিয়াদ বা ভিত গড়েছে সংস্কৃত শব্দ ও তার শ্রেণিভুক্ত আর যে সকল শব্দ । এগুলি নিয়েই বাংলা শব্দভাণ্ডারের মৌলিক শব্দ । যেমন – তৎসম , তদ্ভব , অর্ধতৎসম ইত্যাদি ।
■ তৎসম শব্দ :
● বাংলা শব্দভাণ্ডারের যে সকল শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে অপরিবর্তিত বা অবিকৃতরূপে সরাসরি বাংলা ভাষায় এসেছে বা এখনও আসছে , তাদের বলা হয় তৎসম শব্দ ।
● যেমন — সমুদ্র , ধরিত্রী , বৃক্ষ , মুনি , কর্ণ , চক্ষু , পুষ্প , হস্ত , চন্দ্র , লতা , ফল , শয্যা , কেশর , নিরীক্ষণ , সম্পাদন , পাপাত্মা , মহি , পৃষ্ঠ , পাষাণ , কর্মকার , দুগ্ধ , মণ্ডল , সূর্য , আকাশ , বায়ু , অরণ্য , গিরি , নক্ষত্র , নিমন্ত্রণ , মার্গ , প্রজ্ঞা , শাস্ত্র , বল্মীক , জাহ্নবী , শ্বেত , তৃণ , বনস্পতি , বিসর্জন , বিচ্ছেদ , প্রস্তর , স্বতন্ত্র ইত্যাদি ।
● উদাহরন : নদী ( সংস্কৃত ) > নদী ( বাংলা ) ।
● লক্ষণীয় যে , সংস্কৃত শব্দ ‘ নদী ’ ও বাংলা শব্দ ‘ নদী ’ সম্পূর্ণ এক । সেজন্য এটি একটি তৎসম শব্দ এর উদাহরন ।
● তৎ ’ অর্থাৎ , সেই বা সংস্কৃত , ‘ সম ’ শব্দের অর্থ সমান ।
সুতরাং তৎসম শব্দের অর্থ হল সংস্কৃতের সমান ।
● বাংলা ভাষায় গৃহীত তৎসম শব্দ মােট বাংলা শব্দের প্রায় চুয়াল্লিশ শতাংশ , অর্থাৎ প্রায় পঞ্চান্ন হাজার । বাংলা শব্দভাণ্ডারে এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ ।
ভাষাবিদগন তৎসম শব্দকে দু – শ্রেণিতে ভাগ করেছেন ।
(১) সিদ্ধ তৎসম ,
(২) অসিদ্ধ তৎসম ।
● সিদ্ধ তৎসম – বৈদিক বা সংস্কৃতে ব্যবহৃত হয় এমন তৎসম শব্দ সিদ্ধ তৎসম । যথা — চন্দ্র , আকাশ , হরণ ইত্যাদি ।
● অসিদ্ধ তৎসম – বৈদিক বা সংস্কৃতে ব্যবহৃত হতে দেখা যায় না এমন তৎসম শব্দ অসিদ্ধ তৎসম শব্দ । যথা — কৃষাণ , ঘর ইত্যাদি ।
● লক্ষণীয় বাংলা শব্দভাণ্ডারে তৎসম শব্দ সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও বাংলা সাহিত্যে তার ব্যবহার ক্রমশ কমছে । কারণ সাধুভাষার ব্যবহার যত কমছে তৎসম শব্দের ব্যবহার তত হ্রাস পাচ্ছে । সে স্থান দখল করছে তদ্ভব , অর্ধতৎসম , দেশি ও বিদেশি শব্দ । “