বাংলা পেডাগোজি – ভালাে হস্তাক্ষরের বৈশিষ্ট্য

“■ ভালাে হস্তাক্ষরের বৈশিষ্ট্য :

ভালাে হাতের লেখার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় । সেগুলি হল –

● স্পষ্টতা :
লিখিত অক্ষরগুলি যেন স্পষ্টভাবে লেখা হয় । শিক্ষার্থীদের প্রধানত অসুবিধা দেখা দেয় যুক্তবর্ণ লেখার বেলায় । যুক্তবর্ণ ছাড়াও অন্য বর্ণগুলি যাতে শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে লিখতে শেখে সেদিকে পিতামাতা , অভিভাবক ও শিক্ষক সবাই নজর দেবেন ।

● সরলতা :
জড়িয়ে কোনাে অক্ষরের লেখার প্রবণতা শিক্ষার্থীদের ত্যাগ করতে হবে । সহজ – সরলভাবে রেখাবিন্যাস করে অক্ষরগুলি লিখতে শেখানাে জরুরি । একটির সঙ্গে একটি যেন জড়িয়ে না যায় সেটা দেখতে হবে ।

● সমতা বা সমরূপতা :
প্রত্যেক অক্ষরের ছাঁচ বা Pattern সমান না হলেও লেখার সময় যাতে খুব বেশি ছােটো – বড়াে হয়ে না যায় — অর্থাৎ সমরূপ হয় সেটা দেখতে হবে । অস্বাভাবিক ছােটোবড়াে অক্ষরবিন্যাস হলে শুধু দৃষ্টিকটু হবে না , নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গায় তা ধরানাে যাবে না । সেজন্য ছােটোদের অনুশীলনের খাতায় খােপ খােপ করা থাকে ।

● ব্যবধান :
সবসময় নির্দিষ্ট space বা ব্যবধান রক্ষা করা বাঞ্ছনীয় । অক্ষরগুলি বসবে উপযুক্ত ব্যবধান বজায় রেখেই । শুধু অক্ষর নয় , একটি লাইনের সঙ্গে অন্য একটি লাইনের ব্যবধানও যেন ঠিক থাকে । আর সাদা কাগজে লেখার সময় লেখার লাইন যাতে বেঁকে না যায় সেদিকেও নজর দিতে হবে ।

● দ্রুততা :
যথাসম্ভব দ্রুততার সঙ্গে লেখার অভ্যাস করানাে দরকার । আবার দ্রুত লিখতে গেলে যাতে অক্ষরগুলাে ঠিক লেখা হয় সেটাও দেখতে হবে । অনেক সময় তাড়াতাড়ি লিখতে গেলে কিছুই বােঝা যায় না এমন যেন না হয় ।

● যতিচিহ্নের যথাযথ ব্যবহার :
লেখার সময় যাতে যতিচিহ্নগুলি ঠিক ঠিক জায়গায় বসে সেদিকে নজর দিতে হবে । এটি অবশ্য দীর্ঘ অনুশীলনসাপেক্ষ । আমরা অনেকেই যতিচিহ্নের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন নই । শিক্ষকের সযত্ন হস্তক্ষেপ ছাড়া এ ব্যাপারটি সহজে হওয়া সম্ভব নয় ।

● লেখার অক্ষরগুলি কেমনভাবে বিন্যস্ত হবে , তাদের ছাঁচ কেমন হবে — এ সম্পর্কে একটি সুন্দর সংস্কৃত শ্লোক আছে —

সমানি সমশীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ ।
অব্যাকুলিত মাত্রাণি যাে বৈ লিখতি লেখকঃ ।।

● অর্থাৎ , অক্ষরগুলি হবে সমআকৃতিবিশিষ্ট , তাদের উচ্চতা বা শীর্ষ ( height ) একরূপ হবে , তারা যেমন ঘন সন্নিবিষ্ট হবে , আবার তাদের মধ্যে থাকবে প্রয়ােজনীয় দূরত্বও । লেখার মাত্রাগুলি সমরেখায় অবস্থান করবে ।

Related posts:

পদার্থ কাকে বলে ? পদার্থ ও বস্তু কি এক ?
প্রশ্ন : মূল্যায়ন কাকে বলে ? মূল্যায়ন কয় প্রকার ও কী কী ? যে - কোনো একপ্রকার মূল্যায়নের বিবরণ দি...
একক পাঠ পরিকল্পনা কাকে বলে ? পাঠ পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা লিখুন । এর সুবিধা লিখুন ।
শিক্ষা পরিকল্পনা কাকে বলে ? শিক্ষা পরিকল্পনার শ্রেণিবিভাগ করুন । যেকোনো একপ্রকার পরিকল্পনার বিবরণ দি...
ধারণা মানচিত্র কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্য লিখুন । বাস্তবায়নের উপায় লিখুন । এর গুরুত্ব লিখুন ।
পাঠ একক বিশ্লেষণ কাকে বলে ? পাঠ একক বিশ্লেষণের স্তর বা ধাপগুলি লিখুন
অন্তর্ভুক্তিকরণে ( সমন্বিত শিখনে ) প্রদর্শিত শিল্পকলার কীভাবে প্রয়োগ করবেন
প্রদর্শিত শিল্পকলার লক্ষ্য , বৈশিষ্ট্য , গুরুত্ব ও বাস্তবায়নের কৌশল
প্রাথমিক স্তরে পাঠদানের ক্ষেত্রে নাটকের ব্যবহার
মূল্যবোধ শিক্ষায় বিদ্যালয় ও শিক্ষকের ভূমিকা
মূল্যবোধ || মূল্যবোধের বৈশিষ্ট্য || প্রাথমিক স্তরে মূল্যবোধের শিক্ষার গুরুত্ব
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষায় তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ভূমিকা
সমন্বয়িত শিক্ষণে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সমস্যা ও সাফল্য
পাঠক্রম পরিব্যাপ্ত শিক্ষণবিজ্ঞানে তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ব্যবহার
পাঠক্রম পরিব্যাপ্ত শিক্ষণবিজ্ঞানে তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ব্যবহার
উদাহরণসহ প্রকল্প পদ্ধতির বিবরণ
পূর্বসূত্রজনিত শিখন ( Contextualization ) কাকে বলে ?
জ্ঞান , পাঠক্রম , পাঠ্যবই , শিক্ষার্থী ও শিক্ষণবিজ্ঞানের মধ্যের সম্পর্ক
অনুসন্ধান পদ্ধতি
জ্ঞান নির্মাণ কীভাবে হয় উদাহরণসহ আলোচনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page