“■ কীভাবে হাতের লেখা শেখানাে হবে :
● একেবারে প্রথম পর্যায়ে ছাত্রদের খেয়ালখুশিমতাে হিজিবিজি আঁকতে দেবার সুযােগ দিতে হবে । ক্রমশ এটা ওটা হিজিবিজি লিখতে লিখতে হাতের আঙুলের পেশিগুলাে নমনীয় বা বলিষ্ঠ হবে । কলম ধরার ব্যাপারটা আয়ত্তে আসবে ।
● এরপর স্লেটে কয়েকটি বর্ণ লিখে দিয়ে তার উপর লিখতে বা মকশাে দিতে বলতে হবে । প্রথমটা এদিক – সেদিক হবে — তাতে রাগ বা বিরক্তি ভাব দেখানাে চলবে না । অনুশীলনের মাধ্যমে সেগুলি ঠিক হয়ে যাবে ।
● পরবর্তী স্তরে বিভিন্ন বর্ণের চার্ট দেখে বা বইতে যেসব বর্ণ আছে তা লিখতে দিতে হবে । বারবার লিখতে লিখতে একসময় তাকে ওই নির্দিষ্ট ছাঁচটির কাছাকাছি যাবে । আর কীভাবে অক্ষরটি লিখতে হবে , কোন্ দিকে আঙুল ঘােরাতে হবে , তা প্রথম দিকে হাতে ধরিয়ে অভ্যাস করাতে হবে । এ ব্যাপারে তাদের যথেষ্ট উৎসাহিত করতে হবে , যাতে তারা আরও ভালােভাবে তা লিখতে পারে ।
● যুক্তাক্ষর শেখানাে হবে আরও পরবর্তী পর্যায়ে । বর্ণ লেখার পর , তারা ছােটো ছােটো শব্দ লিখতে পারবে । প্রথম দিকে যুক্তাক্ষরহীন শব্দ ও পরবর্তী স্তরে যুক্তবর্ণ দিয়ে শব্দ লেখানাে দরকার ।
● এই প্রসঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয়ের দিকে নজর দেওয়া জরুরি । সেগুলি নিচে আলোচনা করলাম ।
১। শিক্ষার্থীদের মাত্রা দিয়ে লেখার ব্যাপারটা জানিয়ে দিতে হবে ।
২। স্বরবর্ণ , ব্যঞ্জনবর্ণ ও যুক্তবর্ণের কোথায় কোথায় মাত্রা হয় না তা শিক্ষক মহাশয় জানিয়ে দেবেন ।
এ , ও , খ , গ , ঙ , ঞ , ণ , থ , ধ , প , শ , ৎ
৩। কার বা ধ্বনি চিহ্ন সম্পর্কে জানাতে হবে –
া — আ – কার ।
ি— হ্রস্ব – ই – কার ।
ী — দীর্ঘ – ঈ – কার ।
ু — হ্রস্ব – উ – কার ।
ূ — দীর্ঘ – ঊ – কার ।
ৃ — ঋ – কার ।
ে — এ – কার ।
ৈ — ঐ – কার ।
ো — ও – কার ।
ৌ — ঔ – কার ।
৪। ফলার ব্যবহার ;
ণ- ফলা – অপরাহ্ন
ম – ফলা – যুগ্ম
ন – ফলা – যত্ন , রত্ন
র – ফলা – প্রাণ , ত্রাণ
ব – ফলা – অন্বয় , বিদ্বান
ল – ফলা – অম্ল
য – ফলা – সত্য
৫। যুক্তবর্ণগুলির ছাঁচ বা Style বিশেষরূপে শিখিয়ে দেবেন ।
৬। টেবিলের ওপর ঠিকমতাে কাগজ রাখা , কলম বা পেনসিল ঠিকমতাে ধরা , সঠিক ভঙ্গিতে বসা , পেনসিল বা কাগজকে চোখ থেকে এক ফুট দূরত্বে রাখা , সঠিকভাবে হাত ও আঙুলকে সঞ্চালন করানাের অভ্যাস তৈরি করাতে হবে ।
৭। খাতার ওপরে ও বাঁ দিকে যথাযথ মার্জিন রেখে যেন ছেলেমেয়েরা লেখার মাধ্যমে অভ্যাস করে তা দেখতে হবে ।
৮। বারবার রাবার ঘসে কাগজ বা খাতা না ছিঁড়ে ফেলে তা দেখতে হবে ।
৯। অক্ষরগুলাে যাতে ঠিকঠাক লেখে তা সচেতনভাবে দেখতে হবে ।
১০। কোনাে কঠিন অক্ষর লিখতে না পারলে ভালাে করে দেখিয়ে দিতে হবে ।
১১। শিক্ষক / শিক্ষিকা বর্ণগুলির উচ্চারণ যথাযথ শােনাবেন ।
যেমন—
হ্রস্ব – ই ,
দীর্ঘ – ঈ ,
হ্রস্ব – উ ,
দীর্ঘ – ঊ ,
তালব্য – শ ,
দন্ত্য – স,
মূর্ধন্য – য ,
বর্গীয় – জ ,
অন্তঃস্থ – য ,
ঙ ( উয়োঁ ) ,
ঞ ( ইয়োঁ ) প্রভৃতি ।
১২। সর্বোপরি কোনাে ভয় না দেখিয়ে বা শাসন না করে এইগুলাে ধৈর্য ধরে শেখাতে হবে ।
১৩। নিম্নশ্রেণিতে অনুলিখনের ব্যবস্থাও বেশ উপযােগী ।