বর্তমান সমস্যার সমাধান

📚 ( 4 ) সৃজনশীলতার বিকাশে শিক্ষকের পাঠদানের মূল নীতি হবে আবিষ্কারের পরিবেশ তৈরি করা এবং সেখানে শিক্ষার্থীরাই আবিষ্কারকের ভূমিকা নেবে । বাস্তবে সে নতুন আবিষ্কার করছে তা নয় , তবে আবিষ্কৃত তথ্যের কার্যকারণ জানতে সেই জানার পদ্ধতিটি যেন আবিষ্কারের ন্যায় হয় । তার জন্য এইগুলাে করতে হবে—

( 1 ) সংগৃহীত উপাদান থেকে তথ্য আহরণ : সংগৃহীত উপাদান থেকে কত রকমের প্রয়ােজনীয় তথ্য জানা যায় তা নির্দিষ্ট করা । যেমন — শিলালিপি , মুদ্রা , প্রাচীন কীর্তির ধ্বংসাবশেষ , ঐতিহাসিক বিবরণ ইত্যাদি থেকে সেই সময়কার ইতিহাসের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানা যায় ।

( 2 ) বর্তমান সমস্যার সমাধান : বর্তমান কোনাে সমস্যা যেমন — মূল্যবােধের অবক্ষয় , নিরক্ষরতা দূরীকরণ প্রভৃতি সম্পর্কে আলােচনা করে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই সমস্যাসমাধানের পথ নির্ণয় করতে পারবে ।

( 3 ) ভবিষ্যৎ ফলশ্রুতি সম্পর্কে কল্পনা : সরকারি ও বেসরকারি স্তরে আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ভবিষ্যতে জনগণের ওপর তার প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলা হয় । যেমন — পঞ্চায়েতের কাজ , লােকপাল বিল , মণ্ডল কমিশন রিপাের্ট , সংখ্যালঘুদের জন্য চাকরির সংরক্ষণ ইত্যাদি ।

( 4 ) শ্রেণিকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ : এখানে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকরণের পদ্ধতির ওপর কিছু অভিজ্ঞতা দেওয়া হয় । শিক্ষক বিভিন্ন তথ্য শিক্ষার্থীদের দেবেন , শিক্ষার্থীরা তথ্যগুলিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে স্থাপন করেন , অতঃপর শিক্ষক শ্রেণিকরণের মূল্যায়ন এবং আলােচনা করবেন ।

( 5 ) পরীক্ষা পদ্ধতি : বিদ্যালয়ে সৃজনক্ষমতাকে উৎসাহিত করতে হলে আমাদের গতানুগতিক পরীক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেও পরিবর্তন আনতে হবে । আমাদের সম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থাই পরীক্ষাকেন্দ্রিক , ফলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা কেবল পুস্তকে প্রাপ্ত তথ্যগুলি আয়ত্ত করার চেষ্টা করে । পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে যদি এমন প্রশ্ন থাকে । যা উত্তর দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে হয় তাহলে সেক্ষেত্রে মূল্যায়নের মাধ্যমে সৃজনক্ষমতাকে উৎসাহিত করা হয় ।

📜 পরিশেষে একথা বলা যায় যে , সৃজনশীলতার বিকাশে যা সবচেয়ে বেশি প্রয়ােজন তা হল স্বাধীনতা , চিন্তা , মনন , অধ্যয়ন ও কার্যাবলির অবাধ স্বাধীনতা যা শিক্ষার্থীকে দিতে হবে । পাঠক্রম , মূল্যায়ন ও প্রশাসনিক বেড়াজালে শিক্ষার্থীকে আবদ্ধ করা চলবে না ।