Child Psychology : শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে ? কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী ? শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার সাধারণ নীতি ও পদ্ধতিগুলি লিখুন।

শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে ? কয় ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী ? শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার সাধারণ নীতি ও পদ্ধতিগুলি লিখুন।

উত্তর :-

শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা :-

শ্রেণিকক্ষের ব্যবস্থাপনা বলতে বোঝায় একটি সুষ্ঠু পরিচালনা সংগঠন যার মাধ্যমে শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সার্বিকভাবে সঠিক পথে চালানো যায় এবং শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে সমস্যার সমাধানে সহায়তা করা যায় । শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনাকে 4 ভাগে ভাগ করা যায় যথা—

( i ) স্বৈরতান্ত্রিক শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা ,

( ii ) গণতান্ত্রিক শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা ,

( iii ) উদাসীন শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং

( iv ) নৈরাজ্যমূলক শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা ।

শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার সাধারণ নীতি :

শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার কতকগুলি সাধারণ নীতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে , যা এখানে ব্যক্ত হল–

( 1 ) শ্রেণিকক্ষ পরিচালনার নিয়মাবলি ( Rule setting and classroom proce dures ) : অনেক সময় দেখা যায় শ্রেণিতে কিছু শিক্ষার্থী লক্ষ্যে পৌঁছোবার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে । এই পরিস্থিতিতে যারা শিখতে চায় তারা হতাশ হয়ে পড়ে । কথা বলা , ঝগড়া করা প্রভৃতি আচরণ যেমন শ্রেণির পক্ষে ঠিক নয় , তেমনি যখন – তখন শ্রেণি ত্যাগ করা , পেনসিল কাটা , জল খাওয়া এই সমস্ত আচরণও শ্রেণি পরিচালনায় বাধা দেয় । তাই এই সমস্ত আচরণের ক্ষেত্রেও নিয়ম থাকা দরকার এবং নিয়মগুলি সম্বন্ধে বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের অবহিত করা প্রয়োজন ।

( 2 ) শ্রেণি কাজের জন্য সামাজিক আচরণের নির্ধারণ ( Define the social behaviour necessary for activities ) : শিক্ষক , শিক্ষার্থীর কাজের সময় কী কী সামাজিক আচরণ প্রয়োজন তা নির্ধারণ করে দেবেন এবং তারা কীভাবে সেই কাজে অগ্রসর হবে তাও তিনি স্থির করে দেবেন । কোন্ কোন্ বিষয় কাজের জন্য ঠিক নয় তাও তিনি বলে দেবেন ।

( 3 ) স্বতঃস্ফূর্ত শৃঙ্খলা ( Spontaneous discipline ) : শ্রেণিতে শৃঙ্খলা স্বতঃস্ফূর্ত হওয়াই বাঞ্ছনীয় । তবে প্রথম দিকে প্রয়োজন মতো আরোপিত শৃঙ্খলা ব্যবহার করা যেতে পারে ।

( 4 ) নির্দিষ্ট কার্যাবলির জন্য নিয়ম তৈরি করা ( Make an act of rule for the selected activities ) : কোনো একটি নির্দিষ্ট কাজের জন্য কী ধরনের নিয়ম অনুসরণ করতে হবে তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন । এখানে কতকগুলি শর্ত মানতে হবে—

( i ) নিয়মগুলি সংক্ষিপ্ত করতে হবে ।

( ii ) পরস্পর বিরোধী নিয়ম ব্যবহার করা যাবে না ।

( iii ) বিশেষ নিয়মকে কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা বলতে হবে ।

( 5) কৃতকার্যের জন্য ফলভোগ ( Consequences ) : বাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়ার জন্য পুরস্কার , অবাঞ্ছিত প্রতিক্রিয়ার জন্য শাস্তি পাবে । তবে শাস্তিদানের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক হতে হবে । শিক্ষককে মনে রাখতে হবে পুরস্কার বা শাস্তি যেন শিক্ষার্থীর আচরণের সঙ্গে যুক্ত হয় , কখনোই যেন শিক্ষকের সঙ্গে যুক্ত না হয় ।

( 6 ) আচরণ পরিবর্তন ( Behaviour modification ) : শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের লক্ষ্য কেবল অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে পাঠ্যবিষয় সঞ্চালন করা নয় । শিক্ষার্থীর অবাঞ্ছিত আচরণ সংশোধনও তাঁর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য । এর জন্য তিনি আচরণ পরিবর্তনের কৌশলগুলি প্রয়োগ করবেন । যেমন — শক্তিদায়ী উদ্দীপকের নীতির ( Principle of Reinforcement ) সাহায্যে পরিকল্পিতভাবে ধনাত্মক রি – এনফোর্সমেন্টের সাহায্যে অবাঞ্ছিত আচরণ দূর করা ।

( 7 ) ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাওয়া ( Maintaining Continuity ) : শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনায় ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ নীতি । তাই শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা জরুরি । তাহলে প্রথমে উৎসাহ পরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ।

শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি

( 1 ) তরঙ্গ প্রক্রিয়া ( Ripple effect ) : কোনো জলাশয়ে ঢিল ছুড়লে সৃষ্ট ঢেউ যেমন সমস্ত জলাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে ঠিক তেমনি শ্রেণিকক্ষে কোনো ছাত্রকে নির্দেশ বা সংযত আচরণ করতে বললে তার প্রভাব ঢেউয়ের মতো ছড়িয়ে পড়ে । শ্রেণিকক্ষের এই বৈশিষ্ট্যটি শিক্ষক তাঁর প্রয়োজনমতো প্রয়োগ করবেন ।

( 2 ) Withinness Withinness বলতে বোঝায় শ্রেণিতে কী হচ্ছে তা শিক্ষকের বোঝার ক্ষমতা । শ্রেণিতে কোন্ শিক্ষার্থী অশোভন আচরণ করছে এবং তা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ তা শিক্ষক লক্ষ রাখবেন । সেই আচরণকে ছড়িয়ে পড়তে এবং ব্যাপক আকার ধারণ করার সুযোগ দেবেন না , অঙ্কুরেই তা বিনষ্ট করতে হবে। ( Nip in the bud )

( 3 ) বিভিন্ন বিষয়ে মনঃসংযোগের ক্ষমতা ( Overlapping ) : শিক্ষককে প্রয়োজন মতো একত্রে একাধিক বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে । একেই Overlapping বলে । এটি শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনার একটি অন্যতম শর্ত । যেমন — শ্রেণিকক্ষে যখন শিক্ষক বোর্ডে অঙ্ক করছেন তখন কিছু ছাত্র হয়তো পরস্পর কথা বলছে । বোর্ডে অঙ্ক কষার সময়ও ছাত্ররা কী করছে শিক্ষককে সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে ।

( 4 ) স্বাভাবিক সঞ্চালনের ক্ষমতা ( Transition Smoothness ) : Kounin বলেছেন , অনেক সময়েই শিক্ষককে বিষয়ান্তরে বা প্রসঙ্গান্তরে যেতে হয় । এই যাওয়াটা যাতে সাবলীলভাবে ঘটে সে বিষয়ে শিক্ষককে সচেতন থাকতে হবে । শিক্ষার্থীরা যেন কখনোই মনে না করতে পারে যে শিক্ষক অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা করেছেন।

( 5 ) শিক্ষার্থীদের সচেতন করার ক্ষমতা ( Group Alertness ) : শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে ব্যক্তি – শিক্ষার্থীর উপর বিশেষ নজর না দিয়ে শিক্ষক সমস্ত ছাত্রের প্রতি লক্ষ রাখবেন এবং পাঠদানের মধ্যে বৈচিত্র্য আনবেন ।

( 6 ) ব্যক্তি অপেক্ষা তার আচরণের উপর গুরুত্ব দেওয়া ( Focus on behaviour rather than individual ) : শিখন হল আচরণের পরিবর্তন ঘটানো । সেজন্য শিক্ষক ব্যক্তি শিক্ষার্থীর উপর অধিক গুরুত্ব না দিয়ে তার আচরণের প্রতি গুরুত্ব দেবেন ।

Related posts:

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবন কথা
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী : 2024
চন্দ্রযান-3 : চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ ভারত
GENERAL STUDIES : TEST-2
GENERAL STUDIES : 1
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স: 8ই সেপ্টেম্বর
'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
তপনের জীবনে তার ছোটো মাসির অবদান আলোচনা করো।
সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝ ?
আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝায় ? এটি কয়প্রকার ও কী কী ?
একটি সাদা কাগজকে কীভাবে তুমি অস্বচ্ছ অথবা ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যমে পরিণত করবে ?
ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অপ্রভ বস্তুও কি আলোর উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে?
বিন্দু আলোক - উৎস কীভাবে পাওয়া যেতে পারে ?
বিন্দু আলোক - উৎস ও বিস্তৃত আলোক - উৎস কী ?
অপ্রভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বপ্নভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
দিনেরবেলা আমরা ঘরের ভিতর সবকিছু দেখতে পাই , কিন্তু রাত্রিবেলা আলোর অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিসই দেখতে পা...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page