বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষায় তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ভূমিকা

প্রশ্ন : বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষায় তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ভূমিকা লিখুন । এর সুবিধা লিখুন ।

উত্তর : বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষাগত চাহিদা একেবারে ভিন্ন । একদিকে যেমন তাদের ভিন্ন গোষ্ঠীসম্পন্ন পারিপার্শ্বিক জগৎ , সমাজ সম্পর্কে জ্ঞান দরকার , অন্যদিকে তেমন শিক্ষাগ্রহণে কার্যগত বাধার জন্য অন্যরকম মাধ্যমের প্রয়োজন ।

এই ক্ষেত্রে তথ্য সংযোগসাধন প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে । শিক্ষণ – শিখনে তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণ হল গুণমানের উন্নয়ন ঘটানো , পাঠক্রমিক পরিবর্তনকে সহায়তা করা এবং অক্ষম শিক্ষার্থীদের কিছু ধারণা দান ।

ICT- কে নানাভাবে ব্যবহারের কতকগুলি রূপ হল :

1. Compensation Uses : শিক্ষার্থীরা যাতে সংযোগসাধন ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে স্বচ্ছন্দে কাজ করতে পারে সংযোগসাধন প্রযুক্তি সাহায্য করে । এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা যায় যে তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের তাদের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে , তাদের অভিজ্ঞতাগুলি বাছাই করতে সমস্যাসমাধান করতে , তথ্যকে সহজলভ্য করতে , নিজের পারিপার্শ্বিক ও জগৎ সম্পর্কে জানতে সহায়তা করে ।

2. Didactive Uses : বিভিন্ন চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রেক্ষিতে শিক্ষায় তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তির ব্যবহার নতুন শিক্ষণপদ্ধতি ও বিচার ক্ষমতা এনেছে , তাই তথ্য ও সংযোগসাধন পদ্ধতির একটি গুরুত্ব বর্তমান যা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার কথা বলে । ব্যক্তিগত বিকাশ , অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রেণিতে শিক্ষামূলক প্রচেষ্টা , বিশেষ চাহিদা , পার্থক্য , সক্ষমতা প্রভৃতি লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করে । তারা যাতে যথার্থভাবে শিক্ষা নেয় তার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিখন প্রয়োজন ।

3. Communication Uses : যে শিশুদের বিশেষ সমস্যা আছে প্রযুক্তি তাদের সঙ্গে সমাজের সংযোগের মধ্যস্থতা করে । বিশেষ ধরনের যন্ত্রপাতি দরকার যার সাহায্যে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পাঠদান করা যায় । সহযোগী যন্ত্র ও নানারকম সফটওয়্যারও আছে । শিক্ষকরা প্রয়োজনমতো এগুলি ব্যবহার করেন । কম্পিউটার তাদের সহযোগী হিসেবে থাকতে পারে অথবা সংযোগসাধন করতে @ পারে । যাদের সঞ্চালন ও সংযোগসাধনে সমস্যা থাকে কম্পিউটার তাদের নানাভাবে সাহায্য করে

বিশেষ শিশুদের অন্তর্ভুক্তির জন্য তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবস্থাপনা : কিছু কিছু শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনাই একমাত্র পথ কারণ এর মাধ্যমে তারা তাদের প্রয়োজনীয় মতামত ও চাহিদাগুলি জানতে পারে । এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি – ভিত্তিক সমাধানই তাদের অন্তর্ভুক্তির মূল প্রাণকেন্দ্র । বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার থেকে তথ্য ও সংযোগসাধন প্রযুক্তি যেসব শিক্ষামূলক সুযোগ – সুবিধার ব্যবস্থা করে তা উল্লেখ করা হল—

1. শিশুর বিকাশের ( অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ) প্রাথমিক স্তরগুলির নির্ধারণ ।

2. নতুন দক্ষতা সৃষ্টি বা বর্তমান দক্ষতাগুলির সংস্কার দ্বারা ব্যক্তিগত বিকাশে সহায়তা করা ।

3. তথ্যসংগ্রহের ক্ষমতার সংস্কার ।

4. সংযোগসাধন ও কার্যক্রমগত সহায়তাদানের মাধ্যমে ভৌগোলিক ও সামাজিক বাধা অতিক্রম করা ।

5. তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দ্বারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো স্থানের ধারণা সম্পর্কে সচেতনতার বিকাশ সম্ভব ।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে সুবিধা : তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের যে সুবিধাগুলি পাওয়া যায়—

1. শিক্ষার্থীদের স্বতন্ত্রভাবে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে ।

2. যাদের সংযোগসাধনের সমস্যা আছে তাদের ভিতরের লুক্কায়িত গুণগুলি জাগিয়ে তোলে ।

3. শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার বিকাশ ঘটায় যা ঐতিহ্যগত পদ্ধতিতে সম্ভবপর নয় ।

4. শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও সক্ষমতার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় কার্যাবলি প্রদান করে ।

5. শিক্ষার্থীদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের বৃদ্ধি তাদের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষামূলক চাহিদাকে জাগ্রত করে ।

6. যে শিক্ষার্থীদের ভিন্নধর্মী অক্ষমতাগুলি বর্তমান তাদের শিক্ষাদানে তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তা করে ।

7. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা সাধারণ শিশুদের সাহায্য নিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে ।

৪. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা এই প্রযুক্তির সাহায্যে নিজের মতো করে বিষয়বস্তু শিখতে পারে ।

9. শিক্ষার্থীরা শিক্ষামূলক ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে ।

শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা

1. শিক্ষকদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাকে কমিয়ে দেয় , একত্রে কাজের সুযোগ করে দেয় ।

2. ইন্টারনেটে সংযোগসাধনের মাধ্যমে পেশাগত জ্ঞানগুলি বিকাশে সহায়তা করে ।

3. কর্মীদের মধ্যে দক্ষতা বাড়ায় ।

4. শিক্ষামূলক কার্যাবলির যথাযথ ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করে ।

Related posts:

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবন কথা
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী : 2024
চন্দ্রযান-3 : চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ ভারত
GENERAL STUDIES : TEST-2
GENERAL STUDIES : 1
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স: 8ই সেপ্টেম্বর
'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
তপনের জীবনে তার ছোটো মাসির অবদান আলোচনা করো।
সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝ ?
আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝায় ? এটি কয়প্রকার ও কী কী ?
একটি সাদা কাগজকে কীভাবে তুমি অস্বচ্ছ অথবা ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যমে পরিণত করবে ?
ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অপ্রভ বস্তুও কি আলোর উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে?
বিন্দু আলোক - উৎস কীভাবে পাওয়া যেতে পারে ?
বিন্দু আলোক - উৎস ও বিস্তৃত আলোক - উৎস কী ?
অপ্রভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বপ্নভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
দিনেরবেলা আমরা ঘরের ভিতর সবকিছু দেখতে পাই , কিন্তু রাত্রিবেলা আলোর অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিসই দেখতে পা...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page