মুঘল সাম্রাজ্য

💠 মুঘল সাম্রাজ্য :

◼️ বাবর ( 1526-1530 খ্রিষ্টাব্দ ) :

🔹মধ্য এশিয়ার ফারঘানা প্রদেশের সুলতান , মধ্য এশিয়ার রাজনীতিতে রাজ্যচ্যুত হয়ে ভাগ্যান্বেষী সমরনায়ক রূপে প্রথমে 1504 সালে আফগানিস্তানের কাবুল জয় করেন এবং 1526 সালে পানিপথে বিজয়ের মাধ্যমে ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন । বাবরের বাবা ওমর শেখ মির্জা ছিলেন চামতাই তুর্ক বংশীয় তৈমুর লঙ্গের বংশধর এবং মা মােঙ্গল নেতা চেঙ্গিস খাঁর বংশের কন্যা । এবং মায়ের বংশের নামেই তার প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের নাম হয় ‘ মুঘল ’ । পানিপথের প্রথম যুদ্ধে বাবরের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আফগান সুলতান ইব্রাহিম লােদি । তার বিরুদ্ধে বাবরকে অভিযান চালাতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তারই ওমরাহ ও আত্মীয় আলম খাঁ এবং পাঞ্জাবের শাসনকর্তা দৌলত খান লােদি । 1527 সালে তিনি খানুয়ার যুদ্ধে রানা সঙ্গকে পরাজিত করেন । পরে আফগানদের ঘর্ঘরার যুদ্ধেও পরাস্ত করেন । 1530 সালে তাঁর মৃত্যুর সময় ভারতে মুঘল সাম্রাজ্য পাঞ্জাব থেকে প্রায় বিহার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল ।

🔹বাবর কামান এবং মধ্য এশীয় রণকৌশল ও কিছু দিক থেকে শাসক কৌশলও ভারতে নিয়ে আসেন । বাবর নিজে একজন সুলেখক ছিলেন — তুর্কিতে লেখা তাঁর অকপট আত্মজীবনী বাবরনামা বা ‘ তুজুক – ই – বাবরী ’ বিশেষ উল্লেখযােগ্য ।

◼️ হুমায়ুন ( 1530-40 , 1555-56 খ্রিষ্টাব্দ ) :

🔹বাবরের মৃত্যুর পর তাঁর সাম্রাজ্যের অধিকাংশ অঞ্চলের উত্তরাধিকারী হন হুমায়ুন ( তাঁর নামের অর্থ ছিল ‘ ভাগ্যবান যদিও ভাগ্য অধিকাংশ সময়েই তাঁর প্রতিকূল ছিল ) , কিন্তু অন্য তিন ভাইকে সাম্রাজ্যের কিছু অংশ বণ্টনের ফলে সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে ।

🔹হুমায়ুন চুনার অবরােধ করেও শের শাহকে ছেড়ে দেন । গুজরাট জয়ের পরও গুজরাট ও মালব তাঁর হাতছাড়া হয়ে যায় । শের শাহের চাতুর্যে পরাস্ত হুমায়ুন বাংলা অভিযান থেকে ফেরার পথে চৌসা ( 1539 সালে ) ও বিলগ্রামের ( 1540 সালে ) যুদ্ধে শের শাহের কাছে পরাজিত হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন ।

🔹15 বছর পালিয়ে থাকার পর ( পারস্যে আশ্রয় নেওয়া – সহ ) হুমায়ুন শেষপর্যন্ত 1555 সালে লাহাের জয় করতে সক্ষম হন । আফগানদের হারিয়ে তিনি 1555 সালেই দিল্লি ও আগ্রা দখল করেন , কিন্তু 1556 সালে নিজের গ্রন্থাগারের সিঁড়ি থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু ঘটে ।