অনেক দিন আগের ঘটনা ।
গ্রামে একটা লোক বাস করত তার স্রী,সন্তানদের সাথে।পরিবারের অবস্থা বেশ ভালোই ছিল ।অনেক সুখেই কাটছিল তাদের দিন ।সেই লোকটার নাম ছিল “শফিক”।হয়তোবা আরো অন্যকোন নাম ছিল তার কিন্তু ডাক নামছিল শফিক । যাই হোক আসল ঘটনায় আসি ।
একদিন হঠাত্ শোনা গেল যে শফিক কে নাকি পরি ধরেছে আবার কেউ বলছে ভূতে আবার কেউবা বলছে কালি ধরছে ।শুরু শফিকের বাড়ি ফকিরের আসা যাওয়া ।অনেক ফকিরের অনেক মত ।মাঝে মাঝে প্রায় কিছুদিন পরপর শফিকের ভয়ংকর আচরন দেখা যেত ।
একরাতে সে বিছানায় শুয়ে আছে ।মাঝরাতে শফিক হঠাত্ বিছানা ছেড়ে উঠল রাত তখন দুটো থেকে আড়াইটা হবে ।কেউ একজন তাকে ডাকছে চেহারাটা ভিষন কালো কুটকুটে।শফিক বিছানা ছেড়ে উঠেই সে নদীর দিকে হাঁটতে শুরু করল ।আপন মনে অনেক কথা বিড় বিড় করে বলতে লাগল।তারপর সে হাটতেই থাকলো।একটু পরেই তার স্রী টের পেল ব্যাপারটা তাই কিছু লোককে রাতে ডেকে তুলে শফিককে ফেরাতে গেল ।এতক্ষনে শফিক প্রায় নদীর কাছা কাছি ।যেই সে পানিতে নামতে যাবে অমনি লোকজন সবাই তাকে ধরে ফেলল ।শফিক অনেক চেষ্টা করল পানিতে নামতে কিন্তু পারলো না ।এভাবে প্রায়ই শফিক রাতে বেড় হতো কেউ না কেউ টের পেত আর ওকে বাঁচতো।
এখন আবার কেউ কেউ বলতে শুরু করলো যে ওকে নদীর কোন অসুভ শক্তি ওর ওপর ভর করেছে।গ্রামে মানুষ নদীর এই অসুভো শক্তিকে “মাসান”নামেই চিনে ।এই মাসানের অনেক ক্ষমতা । দিনেও এরা যাদের রাশি খারাপ তাদের আক্রমন করতে পারে ।কেউ এদের কাছ বেঁচে যায় কেউবা বাঁচতেই পারেনা।যারা বেঁচে যায় তাদের চেহারা অনেক শুকিয়ে যায় আর তারা আর কোন দিন নদীতে নামতেই চায়না ।আসলে হয়তোবা এটাই ঠিক ।
একরাতে শফিক মাঝরাতে উঠল তবে এবার কিন্তু নদীতে গেল না সে এলো মসজিদে ।ফজর নামাজের সময় সে নিজে আজান দিয়ে নামাজ আদায় করল ।এবং দুপুরে এলো নদীতে মাছ ধরতে ।সাথে স্রী আর ছেলে ছিল ।কিছুক্ষন মাছ ধরার পর হঠাত্ শফিকের স্রী শফিককে বলে বাড়ি চলে গেল ।সে মাছ মারছে তো মাছ মারছেই ।নদীতে একটা যায়গা ছিল যেখানে পুরো নদী শুকিয়ে গেলেও ওই যায়গা টা শুকাতো না ।ওই যায়গাটা অনেক ভয়ংকর যেখানে অনেক মানুষ মরেছে এখানে।ঠিক আজ শফিক ওই জায়গাতে মাছ ধরছে । ভাবছেন সবাই জানে ঐ জায়গাটা ভালো না কিন্তু শফিক কেন ওখানে গেল মাছ ধরতে ।আসলে শফিক ছিল সাহসি আর নদীর ওই ভয়ানক জায়গাটিকে সে বিস্বাস করতো না ।যাই হোক সে পানিতে ডুবদিল মাছ ধরলো ।কিন্তু এবার ডুবটা দেয়ার পর কেন জানি শফিক আর উপরে উঠছে না ।৫ মিনিট ১০ মিনিট কেটে যায় সে আর পানি থেকে উঠে না ।ওইযে পানিতে পানিতে ডুব দিল সে আর উঠছেই না ।তার ছেলে চিত্কার চেঁচামেঁচি শুরু করল ।সে সবাই কে বলল তার আব্বু পানিতে ডুবদিয়ে আর উঠছেই না ।নদীতে সবাই নেমে খোজাখুজি শুরু করল ।৩০ মিনিট পার হলো তবুও নদীর পানি থেকে শফিককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ।অবশেষে ৩৫ মিনিট পর কেউ একজন হাউ মাউ করে কেঁদে উঠে জানালো শফিককে পাওয়া গেছে ।শফিকের স্রী নিজেই তার স্বামীকে খুঁজে পেল ।সবাই ধরে শফিককে নদীর পাড়ে তুলল ।ওর পেট থেকে পানি বেড় করার চেষ্টা করা হলো কিন্তু কাজ হলো না কারন সে আর নেই ।ডাক্তার বলল শফিক আর নেই মারা গেছে।শফিকের ফর্সা মূখ কালো হয়ে গেল।সে অনেক ভালো মানুষ ছিল ।আজ আর কেউ ওকে বাঁচাতে পারলো না চলে গেল সে সবাইকে ছেড়ে।পরিবার ঢেকে গেল অন্ধকারে ।তারপর শফিককে দাফন করা হলো মসজিদের সাথেই কাছাকাছি একজায়গায়।