জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে গৃহীত কর্মসূচি রূপায়ণের পরিকল্পনা -1992 সম্পর্কে লিখুন

প্রশ্ন : জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে গৃহীত কর্মসূচি রূপায়ণের পরিকল্পনা -1992 সম্পর্কে লিখুন ।

উত্তর : জনার্দন কমিটি সামগ্রিকভাবে রামমূর্তি কমিটির সংশোধিত খসড়াটিকে অনুমোদন করেন । কেবলমাত্র জাতীয় শিক্ষার বাস্তব রূপায়ণের ক্ষেত্রে জনার্দন কমিটি নতুন কতকগুলি সুপারিশ করেছিলেন । জনার্দন কমিটির সুপারিশগুলি অর্থাৎ জাতীয় শিক্ষানীতির (1986) চূড়ান্ত খসড়াটি 1992 খ্রিস্টাব্দের মে মাসে পার্লামেন্টে ঘোষিত হয় এবং গৃহীত হয় । জাতীয় শিক্ষানীতির (1986) এই চূড়ান্ত খসড়া অনুযায়ী 1992 খ্রিস্টাব্দের কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণের জন্য যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলেন তাকে POA বলা হয় । এই কর্মসূচির মূল বিষয়গুলি নীচে দেওয়া হল—

কর্মসূচি : শিক্ষাকাঠামো: 1986 খ্রিস্টাব্দের মূল জাতীয় শিক্ষানীতিতে 10+2+3 এই শিক্ষা কাঠামোর প্রথম দশ বছরকে 5+3+2 এই তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছিল । এর মধ্যে 4 বছরের ন্যূনতম আবশ্যিক শিক্ষাস্তরকে প্রাথমিক শিক্ষা (5 বছর) এবং উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষা (3 বছর)–এই দু – ভাগে ভাগ করা হয়েছিল । আর ব্যকি দু- বছরের জন্য ছিল উচ্চ বিদ্যালয় (High School) শিক্ষা ।

1992 খ্রিস্টাব্দের রূপায়ণ কর্মসূচিতে উপরিউক্ত কাঠামোটি বজায় রাখা হয়েছিল । সেই সঙ্গে বলা হয়েছিল যে +2 স্তরের শিক্ষাকে (একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি) সারা দেশে বিদ্যালয় শিক্ষার স্তরেই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে । কারণ এই শিক্ষা – বিজ্ঞানসম্মত ।

স্কুলছুট এবং জাতীয় মিশন : 1986 খ্রিস্টাব্দের জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসরণে 1992 খ্রিস্টাব্দের রূপায়ণ কর্মসূচিতেও স্কুলছুটদের সমস্যার উৎপত্তি , কারণ ও সমাধানের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল এবং ন্যূনতম প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের সমাপ্তিকাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের ধরে রাখার জন্য সবরকম ব্যবস্থা অবলম্বন এমনকি অভিভাবকদের শাস্তিদানের কথাও বলা হয়েছিল । তবে 1986 খ্রিস্টাব্দের শিক্ষানীতিতে যেখানে 1995 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে 14 বছর বয়স পর্যন্ত এদেশের সমস্ত শিশুকে অবৈতনিক ও আবশ্যিক শিক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল , সেখানে 1992 খ্রিস্টাব্দের রূপায়ণ কর্মসূচিতে বলা হয়েছিল যে একবিংশ শতাব্দীতে প্রবেশ করার আগেই 14 বছর বয়স পর্যন্ত সমস্ত শিশুকে সন্তোষজনক মানের অবৈতনিক ও আবশ্যিক শিক্ষা দিতে হবে । এই লক্ষ্যপূরণ করার জন্য একটি জাতীয় মিশন চালু করতে হবে ।

মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ: মাধ্যমিক শিক্ষার বৃত্তিমুখীকরণ সম্বন্ধে 1986 খ্রিস্টাব্দের শিক্ষানীতিতে বলা হয়েছিল যে , উচ্চতর মাধ্যমিক স্তরের শতকরা 10 ভাগ ছাত্রছাত্রীকে 1990 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এবং শতকরা 25 ভাগ ছাত্রছাত্রীকে 1995 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বৃত্তিশিক্ষা দিতে হবে । 1992 খ্রিস্টাব্দের রূপায়ণ কর্মসূচিতে ওই সময়সীমাকে বাড়িয়ে যথাক্রমে 1995 ও 2000 খ্রিস্টাব্দ করা হয়েছিল । সেই সঙ্গে একথাও বলা হয়েছিল , যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী বৃত্তিশিক্ষা গ্রহণ করবে তাদের অধিকাংশ যাতে চাকরি লাভ করে কিংবা স্বনিযুক্তি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয় তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে । নিয়মিতভাবে বৃত্তিশিক্ষার পাঠ্যসূচির পর্যালোচনা করতে হবে এবং সরকারকে চাকরিতে নিয়োগ সংক্রান্ত উৎসাহিত হয় । নীতি এমনভাবে পুনর্বিবেচনা করতে হবে যাতে মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরা বৃত্তিশিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত হয় ।

এরনাকুলাম সার্বিক সাক্ষরতা প্রচার অভিযান: কেরালা শাস্ত্র সাহিত্য পরিষদ (KSSP) জাতীয় বয়স্ক শিক্ষা প্রকল্প পর্ব থেকেই সাক্ষরতা প্রসার অভিযান কার্যক্রমে সক্রিয় থেকে 1978 খ্রিস্টাব্দে কেরালায় সম্পূর্ণ সাক্ষরতা বিধানের উদ্দেশ্যে একটি 5 বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করে চলতে থাকে । এরপর NAEP- এর সীমাবদ্ধতার নিরিখে ওই পরিকল্পনাটি পুনর্বিবেচনা করে , অন্য আকারে রূপায়ণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় । স্বেচ্ছামূলক সাক্ষরতা বিস্তার কার্যসূচি থেকে লব্ধ অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবং জনতার বিজ্ঞান আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে গণসাক্ষরতা সৃষ্টি ও বিজ্ঞান চেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে এই KSSP কাজ করতে থাকে । NLM লাগু হওয়ার পর এরনাকুলাম জেলাটিতে KSSP পর্যায়ক্রমিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সার্বিক সাক্ষরতা প্রসারকামী উদ্যোগ গ্রহণ করে । 1989 খ্রিস্টাব্দের 26 জানুয়ারি থেকে সরকারি সহায়তা , স্বেচ্ছামূলক অংশগ্রহণ যুগপৎ কাজে লাগিয়ে প্রকল্পটি লাগু করা হয় । 1989 খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে এই প্রকল্পটি সাফল্যমণ্ডিত হয়ে সমাপ্ত হয় । 4 ফেব্রুয়ারি 1990 খ্রিস্টাব্দে এরনাকুলাম ভারতের প্রথম সম্পূর্ণ সাক্ষর জেলা হিসাবে ঘোষিত হয় । 1.85 লক্ষ শিক্ষার্থীর মধ্যে 1-35 লক্ষ জন জাতীয় সাক্ষরতা মিশনের মান অনুযায়ী সাক্ষরতা ও গণক্ষমতা আয়ত্ত করে । এরনাকুলামের সাক্ষরতা 77 % থেকে 98 % -এ উন্নীত হয় । এই সাফল্য পূর্বের জাতীয় বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচির নানাবিধ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠে , নতুনভাবে জাতীয় সাক্ষরতা মিশনের মাধ্যমে সাক্ষরতা প্রসার অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে দিক্‌নির্দেশ করে । অতঃপর নব শিক্ষানীতি , 1986 – এর র মধ্যেও প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনের (POA) মধ্যেও পরিবর্তন আনা হয় এবং তা POA 1992 – এর মধ্যে প্রতিফলিত হয় ।

Related posts:

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবন কথা
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী : 2024
চন্দ্রযান-3 : চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ ভারত
GENERAL STUDIES : TEST-2
GENERAL STUDIES : 1
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স: 8ই সেপ্টেম্বর
'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
তপনের জীবনে তার ছোটো মাসির অবদান আলোচনা করো।
সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝ ?
আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝায় ? এটি কয়প্রকার ও কী কী ?
একটি সাদা কাগজকে কীভাবে তুমি অস্বচ্ছ অথবা ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যমে পরিণত করবে ?
ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অপ্রভ বস্তুও কি আলোর উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে?
বিন্দু আলোক - উৎস কীভাবে পাওয়া যেতে পারে ?
বিন্দু আলোক - উৎস ও বিস্তৃত আলোক - উৎস কী ?
অপ্রভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বপ্নভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
দিনেরবেলা আমরা ঘরের ভিতর সবকিছু দেখতে পাই , কিন্তু রাত্রিবেলা আলোর অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিসই দেখতে পা...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page