অনুসন্ধান পদ্ধতি

প্রশ্ন : অনুসন্ধান পদ্ধতি কাকে বলে ? অনুসন্ধানের পদ্ধতিগুলি উল্লেখ করুন এবং যে – কোনো দুটি পদ্ধতির বিবরণ দিন ।

উত্তর : সাধারণ অর্থে ‘ Enquiry ‘ বা ‘ অনুসন্ধান ‘ বলতে বোঝায় সত্য , তথ্য বা জ্ঞানের জন্য প্রশ্নের মাধ্যমে অনুসন্ধান । অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া শুরু হয় দর্শন , শ্রবণ , স্পর্শ , স্বাদ ও গন্ধ দ্বারা ও এর মাধ্যমে তথ্য সংগৃহীত হয় । অনুসন্ধানের প্রক্রিয়া শুরু হয় দর্শন , শ্রবণ , স্পর্শ , স্বাদ ও গন্ধ দ্বারা — এর মাধ্যমে তথ্য সংগৃহীত হয় । অনুসন্ধানের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় । এই পদ্ধতিগুলি হল—

( ক ) বৈজ্ঞানিক চিন্তন

( খ ) গাণিতিক চিন্তন ,

( গ ) সামাজিক চিন্তন ,

( ঘ ) উচ্চপর্যায়ের চিন্তন । বৈজ্ঞানিক চিন্তন : বৈজ্ঞানিক চিন্তন প্রক্রিয়াটি যে – কোনো বিষয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে । বৈজ্ঞানিক চিন্তন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্ভাবনী মনোভাব জাগ্রত করে এবং বিভিন্ন দক্ষতার বিকাশ ঘটায় । নীচে এর বিভিন্ন ধাপ নিয়ে আলোচনা করা হল ।

1. পর্যবেক্ষণ : বৈজ্ঞানিক চিন্তনের প্রথম ধাপ হল পর্যবেক্ষণ । পর্যবেক্ষণের অর্থ হল খুব সূক্ষ্মভাবে কোনো জিনিসকে বা ঘটনাকে দেখা এবং কী হচ্ছে তা লক্ষ করা । এই কারণে শিক্ষার্থীকে যে – কোনো সমস্যার মূল স্তরে যাওয়ার জন্য তাকে পর্যবেক্ষণ করতে শিখতে হবে । শিক্ষক শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ দেবেন এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করে তথ্য সংগ্রহ করতে বলবেন । এতে শিশুদের জানার আগ্রহ থাকবে ।

2. তুলনা : এইক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে একটি বিষয় সম্পর্কে সে কী বুঝল তা দেখা হয় । তুলনার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীর বোধগম্যতার ধরন উপলব্ধি করা হয় । তারা বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ককে উপলব্ধি করতে পারে ।

3. বাছাই করা ও সংগঠিত করা : এই পর্যায়ে বিভিন্ন নির্ণয়মূলক বৈশিষ্ট্যের দ্বারা বিভিন্ন বিষয়কে শ্রেণিতে ভাগ করা হয় । শিক্ষার্থীরা উপকরণ খুলে মেলায় , শ্রেণিকরণ করে এবং বিভিন্ন উপায়ে তাদের সংগঠিত করে । তারা উপলব্ধি করতে শেখে যে একই বস্তু একই সঙ্গে একাধিক শ্রেণিতে থাকতে পারে । এইক্ষেত্রে শিশুদের তাদের সংগ্রহগুলিকে চিত্র ও গ্রাফের মাধ্যমে প্রকাশ করতে বলা যেতে পারে । এরপর তারা এর মধ্যে তুলনা করতে পারে এবং এটি তাদের পক্ষে অনেক সুবিধাজনক হবে । যেমন ফলফুলের ভিত্তিতে এবং পাতার সংখ্যার উপর গাছের শ্রেণিবিভাগ করা এবং তাদের বিভিন্ন শ্রেণিতে সংগঠিত করা ।

4. পূর্বানুমান : এটি হল প্রশ্নকরণের একটি প্রক্রিয়া । প্রথম তিনটি ধাপের পূর্বজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে এটি তৈরি । বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী সঠিক পূর্বানুমান করতে পারে । এই ধাপটিও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে পূর্বানুমান করতে শেখায় ।

5. পরীক্ষা : শিক্ষার্থীরা তাদের ধারণা ও পূর্বানুমানের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিষয় পরীক্ষা করে । তাই এখানে শিক্ষক যদি বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন উপকরণ দেন তাহলে তারা বিষয়টি ভালোভাবে শিখতে পারে ।

6. মূল্যায়ন : এখানে শিক্ষার্থী পরীক্ষানিরীক্ষার পর যে ফলাফল পায় তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করে অন্যদের সঙ্গে মতামত আদানপ্রদান করে তাদের ভাষাগত রুপদান করে ।
7. প্রয়োগ : শিক্ষার্থী অভিজ্ঞতায় যে বোধগম্যতা লক্ষ করে তার প্রয়োগ ঘটায় । শিক্ষক এখানে শিক্ষার্থীকে যে যা শিখল তার প্রয়োগ ঘটাতে সহায়তা করবেন । তাদের উৎসাহ দেবেন যাতে তারা আরও পরীক্ষা করতে অগ্রসর হয় । নতুন নতুন উপকরণ তাদের দেবেন । শিক্ষার্থীদের মুক্তপ্রান্ত প্রশ্নের মাধ্যমে তাদের কাজে উৎসাহিত করবেন ।

গাণিতিক চিন্তন : গাণিতিক চিন্তন হল উচ্চমানের একটি জটিল কর্মপ্রক্রিয়া । গাণিতিক চিন্তনের মাধ্যমে গণিত শিখন ও জটিল সমস্যাসমূহের সমাধান প্রয়োজন । গাণিতিক চিন্তনের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রকম গাণিতিক অনুসন্ধান পদ্ধতির সম্পর্কে ধারণা লাভ করে । আবার এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যে – কোনো বিষয়কে গাণিতিকভাবে চিন্তনে সক্ষম হয় এবং গাণিতিক বিষয়গুলির দক্ষতা তাদের প্রাত্যহিক সমীক্ষার সমাধানে সহায়তা করে ।

গাণিতিক সমস্যাসমাধানের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত দক্ষতাসমূহের প্রয়োজন হয় । আবার গাণিতিক সমস্যাসমাধানের মধ্য দিয়ে এই সমস্ত সূক্ষ্ম চিত্তনগুলির বিকাশ সম্ভবপর হয় । এগুলি হল—

1. গভীর গাণিতিক জ্ঞান / প্রজ্ঞা ।

2. সাধারণ যুক্তিতর্ক বা বিচারগত ক্ষমতা ।

3. অনুসন্ধানমূলক কৌশলের জ্ঞান ।

4. সহায়ককারী বিশ্বাস ও দৃষ্টিভঙ্গি ।

5. ব্যক্তিগত গুণাবলি যেমন আত্মবিশ্বাস , সহনশীলতা এবং সংগঠন ক্ষমতা ।

6. সমস্যাসমাধানের দক্ষতা ।

গাণিতিক চিন্তনে সমস্যাসমাধান পদ্ধতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম অনুসন্ধানমূলক পদ্ধতির ব্যবহার করা হয় এবং সমস্যাসমাধানের ক্ষেত্রে এর উপর নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে সুক্ষ্ম চিত্তন ক্ষমতার বিকাশ ঘটানো হয় । এ ছাড়াও সূক্ষ্ম গাণিতিক চিত্তনের বিকাশের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলির আশ্রয় নেওয়া হয় ।

1. বিশেষীকরণ : বিশেষ ধরনের সমস্যাগুলির সমাধানের প্রয়াস , উদাহরণের দিকে দৃষ্টিপাত ।

2. সাধারণীকরণ : সমস্যাসংক্রান্ত বিভিন্ন রকম ধাঁচ ও সম্পর্কগুলির বিষয়ে ধারণা লাভ ।

3. অনুমান করা : বিভিন্ন সম্পর্ক ও ফলাফলগুলি নিয়ে আলোচনা করা ।

4. বিশেষীকরণ : কোনো কিছুর সত্যতা প্রমাণের জন্য কারণের অনুসন্ধান ও সংযোগসাধন ।

Related posts:

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবন কথা
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী : 2024
চন্দ্রযান-3 : চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ ভারত
GENERAL STUDIES : TEST-2
GENERAL STUDIES : 1
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স: 8ই সেপ্টেম্বর
'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
তপনের জীবনে তার ছোটো মাসির অবদান আলোচনা করো।
সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝ ?
আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝায় ? এটি কয়প্রকার ও কী কী ?
একটি সাদা কাগজকে কীভাবে তুমি অস্বচ্ছ অথবা ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যমে পরিণত করবে ?
ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অপ্রভ বস্তুও কি আলোর উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে?
বিন্দু আলোক - উৎস কীভাবে পাওয়া যেতে পারে ?
বিন্দু আলোক - উৎস ও বিস্তৃত আলোক - উৎস কী ?
অপ্রভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বপ্নভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
দিনেরবেলা আমরা ঘরের ভিতর সবকিছু দেখতে পাই , কিন্তু রাত্রিবেলা আলোর অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিসই দেখতে পা...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page