প্রশ্ন : প্রদর্শিত শিল্পকলার লক্ষ্য , বৈশিষ্ট্য , গুরুত্ব ও বাস্তবায়নের কৌশলগুলি লিখুন ।
উত্তর : ‘শিল্প’ শব্দটা ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করা হয় । শিল্প ’ – এর মধ্যে চারুশিল্প , সংগীত , নৃত্য , বাদ্য , সাহিত্য , পুতুলনাচ সবক্ষেত্রকেই বোঝায় । আমাদের জীবনের প্রতিটি স্তরেই শিল্পরুচি ও শিল্পবোধের ব্যবহার দেখা যায় । শিল্প কাকে বলে তা নিয়ে মতবিরোধ আছে । হার্বার্ট রীড – এর মতে , “ Art is … an attempt to create pleasing forms . ” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে “ মানুষের প্রয়োজনের সীমা ছাড়িয়ে যা রচিত হয় তাই শিল্প । ” মানুষ প্রথম ছবি এঁকে তার মনের ভাব প্রকাশ করেছে , কথা বলে নয় । আদিম গুহাচিত্রে পাওয়া ছবিগুলির মধ্যে গতি , সজীবতা ও আনন্দ পাওয়া যায় ।
বৈশিষ্ট্য ( Principle ) : শিল্পকলা শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
• শিল্পকলা শিক্ষার দ্বারা শিক্ষার্থী রং , আকার , আকৃতি , গঠন এবং প্রদর্শিত শিল্পে ব্যবহৃত শব্দের অর্থ বুঝতে পারে ।
• শিল্পকলা স্থান ও কালভেদে বিভিন্ন গঠনশৈলী ও আকার আকৃতি এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গড়ে উঠতে পারে ।
• শিশুর ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়তা করে শিল্পকলা ।
• আনন্দদায়ক শিখন ব্যবস্থা বাস্তবায়িত করতে সাহায্য করে ।
• শিল্পকলার দ্বারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে শিল্পবোধ , সৌন্দর্যবোধের জন্ম দেয় তা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়তা করে ।
• শিল্পকলার দ্বারা শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতির প্রতি মমত্ববোধ জন্মায় , পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং একে অন্যের কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় ।
• শিল্পকলা শিক্ষা বিশেষ করে প্রদর্শিত শিল্পকলার দ্বারা শিক্ষার্থীরা যে অভিজ্ঞতা লাভ করে , প্রাথমিক স্তরে তা তাদের উচ্চপ্রাথমিক – মাধ্যমিক স্তরে সক্রিয় হতে সাহায্য করে । এই স্তরে তারা সংগীত , নৃত্য , নাটক এবং অন্যান্য প্রথাগত শিল্পকর্মে অংশগ্রহণে সহায়তা করে ।
• NCF – 2005- এ বলা হয়েছে যে শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক স্তরে শিল্প সম্পর্কে যে অভিজ্ঞতা লাভ করবে তা কেবলমাত্র শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রেষণা এবং আগ্রহ সঞ্চার করে না , তা তাদের শিল্পকর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতেও সহযোগিতা করবে ।
প্রাক্ – প্রাথমিক স্তরের লক্ষ্য : প্রাক – প্রাথমিক স্তরে দৃশ্যকলা এবং চারুশিল্প আলাদাভাবে তুলে ধরা হয় না । এই স্তরে শিক্ষার্থীরা শিল্পকলার সমন্বয়ের দ্বারা শেখে । সমস্ত বিষয় তাদের সামনে তুলে ধরা হয় সমন্বয়ের মাধ্যমে । এই স্তরে শিশুরা শেখে অঙ্কন , মাটির তৈরি মডেল তৈরি করা , নাটক , নৃত্য পরিবেশন , গল্প বলা প্রভৃতি । এই স্তরে সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিল্পকলা শিক্ষার মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যায় না । এই স্তরের মূল লক্ষ্যগুলি হল—
• শিল্পের মাধ্যমে আনন্দ দান ।
• পরিবেশ সম্পর্কে পরিচিত করা ।
• শিক্ষার্থীরা খেলার ছলে শেখে । তাদের খেলার সামগ্রী হল মাটি , বালি , ফুল , পাতা প্রভৃতি । এগুলি প্রকৃতির সঙ্গে তার পরিচয় ঘটায় । ষ
• এই স্তরে শিক্ষার্থীরা সংগীত , নৃত্য , নাটক , সরব পাঠ , ছড়ার গান প্রভৃতির দ্বারা শিল্পকলার সঙ্গে পরিচিত হয় । এইগুলি তাদের প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় ঘটায় ।
প্রাথমিক স্তরের লক্ষ্য : প্রদর্শিত শিল্পকলার প্রাথমিক স্তরে পাঠের লক্ষ্য হল—
• শিক্ষার্থীদের আনন্দ দেওয়া ।
• পরিবেশের ভালোমন্দ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা ।
• প্রদর্শিত শিল্পকলার দ্বারা শ্রেণিকক্ষ , বিদ্যালয় , বাড়ি , সমাজ প্রভৃতির সঙ্গে সমন্বয় ঘটানো ।
• শিল্পকলার সাহায্যে শিক্ষার্থীর মুক্তমন , স্বচ্ছ ধারণা গঠন এবং জীবনের প্রতি মুহূর্তে যে পরিস্থিতি আসবে সেই সম্পর্কে সচেতন করা ।
• শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার বৃদ্ধি , ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি , উদ্ভাবনী শক্তির বৃদ্ধি প্রভৃতি সম্ভব শিল্পকলা চর্চার দ্বারা ।
উচ্চপ্রাথমিক স্তরের লক্ষ্য : প্রাথমিক স্তরে Performing art এর যে অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীরা অর্জন করে তার আরও উন্নয়ন ঘটে উচ্চপ্রাথমিক স্তরে । এই স্তরে প্রাথমিক স্তরের তুলনায় বিষয় সম্পর্কে তাদের প্রেষণা ও উৎসাহ বৃদ্ধি পায় । তাই এই স্তরে শিল্পকলার যে পাঠক্রম প্রস্তাবিত হবে তার লক্ষ্য হবে শিক্ষার্থীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং বিভিন্ন শিল্পকলা সম্পর্কে আগ্রহ বৃদ্ধি করা । এই স্তরে শিক্ষার্থীরা শিল্পকলার পরম্পরা সম্পর্কে যেমন আগ্রহী হবে তেমনি আঞ্চলিক শিল্পকর্ম সম্পর্কেও সচেতন হবে । মনে রাখতে হবে শিল্পশিক্ষা বিশেষ করে Performing art হল শিক্ষার্থীকে সন্তুষ্ট করার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম । উচ্চপ্রাথমিক স্তরে Performing art শিক্ষার্থীদের বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করে রাখে , নিজেরা অংশগ্রহণ করতে পারে , সমাজকে সাহায্য করে এবং সমাজ গঠনে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে ।
এই স্তরে Performing art- এর লক্ষ্যগুলি হল —
—আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা গঠন ।
—শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিল্পকলার গঠন এবং তাদের মধ্যের পার্থক্য করতে সক্ষম
—শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞ এবং প্রয়োজনমতো ব্যবহারে পারদর্শী করে তুলবে ।
—Performing art ব্যাবহারিক জীবন এবং অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে সমন্বয়সাধনে সহায়তা করে ।
—শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল করে তোলে ।
—শিক্ষার্থীদের শিল্পকলার ঐতিহ্য ও তা সংরক্ষণে সহায়তা করে ।
—আঞ্চলিক শিল্পকলা , শিল্পকলার বিভিন্ন উপাদান , জাতীয় ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ধারণা লাভ করতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে ।
—স্থানীয় শিল্পীদের জীবনযাত্রা ও তাদের কাজ সম্পর্কে জানবে এবং শ্রদ্ধাশীল হবে ।
—স্থানীয় স্তরে যে উপাদান পাওয়া যাবে তার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা তাদের শিল্পকর্ম গড়ে তুলবে ।
তাৎপর্য বা গুরুত্ব : আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় শিল্পকলার বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি । বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন শিল্পকলা শিক্ষাকে কার্যকরী করার সুপারিশ করলেও একটা নিস্পৃহভাব রয়ে গেছে দীর্ঘদিন ধরে । কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা হল শিল্পকলা চর্চার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব , নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষমতা অর্জন , পারস্পরিক মতপ্রকাশের ক্ষমতা বৃদ্ধি , স্থানীয় এবং নিজের দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারণা লাভ , পরিবেশের প্রতি মমত্ববোধ সবই সম্ভব ।
প্রদর্শিত কলা ( Performing art ) – এর গুরুত্বগুলি আমরা নিম্নলিখিতভাবে আলোচনা করতে পারি । যথা—
( i ) পাঠক্রমে প্রদর্শিত কলার উপস্থিত থাকা একান্ত প্রয়োজন — বিষয়কে বাস্তবরূপে তুলে ধরার জন্য ।
( ii ) শুধু বিনোদন হিসাবে নয় , বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক ক্ষেত্রের দক্ষতা ও সক্ষমতা বিকশিত হয় শিল্পকলার দ্বারা ।
( iii ) শিল্পকলার পাঠক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থী দেশের সমৃদ্ধ এবং বিচিত্র শৈল্পিক পরম্পরার সঙ্গে পরিচিত হবে ।
( iv ) বিদ্যালয়ে আবশ্যিক বিষয় হিসাবে শিল্পকলার শিক্ষা বিষয় চর্চার হাতিয়ার হয়ে উঠবে ।
( v ) শিল্পকলার চারটি ধারা – সংগীত , নৃত্য , দৃশ্যকলা এবং থিয়েটার — সবগুলি পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে । বিষয় এবং অধ্যায় অনুযায়ী এর প্রয়োগ ঘটাতে হবে ।
( vi ) আমাদের বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধি অটুট রাখার জন্য বিদ্যালয় শিক্ষার অঙ্গনে শিল্পকলার শিক্ষা দিতে হবে ।
( vii ) শিক্ষার্থীর সৃজনশীল মানসিকতা গঠন করার জন্য শিল্পশিক্ষার প্রয়োজন ।
( viii ) শিক্ষার্থীরা অবসর সময়কে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারে ।
( ix ) বর্তমান সময়ের জটিল চাপযুক্ত জীবনে শিশুদের মধ্যে নানারকম মানসিক বৈকল্য দেখা যাচ্ছে । শিল্পকলার চর্চা যা সাংস্কৃতিক কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে ।
( x ) প্রদর্শিত শিল্পকলা চর্চার সঙ্গে সঙ্গে নিজের পছন্দের শিল্পক্ষেত্রে পারদর্শিতা অর্জন করতে পারে । এমনকি ভবিষ্যতে জীবনধারণের শিল্পকর্ম তাকে সহযোগিতা করে । বিদ্যালয়ে যথার্থ শিল্পচর্চার জন্য শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদেরই নয় , তাদের অভিভাবক , শিক্ষক , শিক্ষানীতি রচয়িতা ও নিয়ন্ত্রকগণ এবং শিক্ষাবিদদের মধ্যেও শিল্পচর্চার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হবে ।
কৌশলসমূহ বাস্তবায়ন : শিল্পশিক্ষা বিভিন্ন শিক্ষার্থীর বিভিন্ন স্তরে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বাস্তবায়িত করা যায় । বিভিন্ন সংস্থাও শিল্পশিক্ষাকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রহণ করেছে । স্তর অনুযায়ী পাঠক্রম ( Curriculum ) ও পাঠ্যক্রম ( Syllabus ) যেমন গ্রহণ করা হয়েছে , তেমনি শিখন শিক্ষণ সহায়ক ( LTM ) ব্যবহার করা হয়েছে , মূল্যায়নের ব্যবস্থা হয়েছে । অন্যদিকে হবু শিক্ষকদের Performing art শিক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে , শিক্ষকদেরও Performing art- এর শিক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের দ্বারা ।
রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা যারা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে তাদের বিভিন্ন স্তরের পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা , শিক্ষা দপ্তর , বিদ্যালয় পরিচালন সমিতি , অধ্যক্ষ , শিক্ষক , পিতা – মাতা , সকলকেই বিভিন্ন কর্মশালার দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে – শিল্পশিক্ষা গুণসম্পন্ন শিক্ষার বিস্তারে সহায়তা করে ।
সমস্ত স্কুলেই শিল্পশিক্ষার বিশেষ করে প্রদর্শিত শিল্পকলা শিক্ষার ব্যবস্থা থাকা উচিত এরজন্য বিষয়ে শিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক , প্রয়োজনীয় উপকরণ , শ্রেণিকক্ষ ছাড়া আরও বড়ো ঘর থাকা প্রয়োজন । প্রদর্শিত শিল্পকলা সক্রিয়তাভিত্তিক , এর দ্বারা শিক্ষক – শিক্ষার্থীর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে । কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিল্পশিক্ষা কক্ষ থাকা প্রয়োজন । শিল্পকলা প্রদর্শনের জন্য আলাদা প্রদর্শিত ঘর থাকা প্রয়োজন । তবে অনেকক্ষেত্রেই সাধারণ শ্রেণিকক্ষেই শিল্পকলা শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয় । তবে শিল্পকক্ষ বা সংগীত কক্ষ বা থিয়েটার কক্ষ বা নাটক কক্ষ থাকা একান্তই দরকার স্কুলে । এই কক্ষে নোটিশবোর্ড , প্রয়োজনীয় দ্রব্য রাখার জন্য স্টোর , প্রদর্শনের স্তর , কাজ করার জায়গা , স্লাইড প্রজেকশনের ব্যবস্থা , কম্পিউটার রাখতে হবে । মিউজিক এবং নৃত্যের জন্যও আলাদা কক্ষ থাকতে হবে । ওই কক্ষে বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র – তবলা , তানপুরা , হারমোনিয়াম , সেতার ইত্যাদি থাকবে । এখানে সংগীতচর্চা হবে ।
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত থাকবে বা যে সংখ্যক শিক্ষার্থীকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন শিক্ষার্থী থাকবে । এর ফলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর প্রতি তদারক করা যায় । তবে শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে শ্রেণিকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করা নেওয়া যেতে পারে । এতে শিক্ষক দলগতভাবে তাদের পরিচালনা করতে পারবে ।
বিদ্যালয়ে নির্দিষ্ট পিরিয়ডে শ্রেণিকক্ষে বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে বা নির্দেশকের তত্ত্বাবধানে নাটকের , সংগীতের অনুশীলন চলবে । শিক্ষক দলগত কর্মসূচির দ্বারা বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করবে । দলগত কাজ শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করে তার দক্ষতার প্রসারকে , নিজেদের মধ্যে সংহতির সম্পর্ক গড়ে ওঠে । শিক্ষার্থীরা নিজেরাই শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার – পরিচ্ছন্ন করবে , চার্ট টানাবে , পোস্টার টানাবে , প্রয়োজনে ওইগুলি রং করতেও পারবে । প্রতিদিন প্রয়োজনমতো তারা চার্ট , পোস্টার পরিবর্তন করতে পারবে । এর ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশি বেশি কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে । প্রধান শিক্ষক , শিল্প শিক্ষক এবং বিষয় শিক্ষক — প্রত্যেকেই শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেবে তাদের দক্ষতাকে সকলের সামনে তুলে ধরতে ।
আমাদের দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার ভিন্নতার কথা মনে রেখে শিক্ষার্থীদের যতটা সম্ভব No cost low cost উপাদান ব্যবহার করে তাদের প্রদর্শিত কলা ( Performing Art ) যাতে উপস্থাপন করতে পারে সেদিকে বিদ্যালয় শিক্ষক , অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে হবে ।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে আঞ্চলিক শিল্পকলার বৈশিষ্ট্য ও শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরতে হবে । সকল বিদ্যালয়কেই খেয়াল রাখতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের শিল্পকলা সংক্রান্ত কাজগুলি নিজের সমাজের মধ্যেই করতে পারে । স্থানীয় দক্ষ শিল্পীদের বিদ্যালয়ে আহ্বান করতে হবে তাদের শিল্পকলা প্রদর্শনের জন্য । এর ফলে শিক্ষার্থীরা স্থানীয় শিল্পকলা সম্পর্কে জানবে এবং আগ্রহী হবে । সম্ভব হলে স্থানীয় দক্ষ শিল্পীদের part – time হিসাবে বিদ্যালয়ে নিয়োগ করা যেতে পারে , শিক্ষার্থীদের ওই বিষয়ে পাঠদানের জন্য । বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনীয় উপকরণ – পোস্টার , বই , চার্ট , অডিয়ো ভিশুয়াল উপাদান প্রভৃতি থাকবে । প্রয়োজনমতো এগুলি ব্যবহার করা হবে । বিদ্যালয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পিরিয়ডে , সপ্তাহে অথবা পনেরো দিনে একবার প্রদর্শিত শিল্পকলা নিয়ে কর্মশালা করা যেতে পারে । তিনমাস অন্তর একবার , মাসে একবার অথবা বছরে একবার বিদ্যালয়ে উপস্থাপিত করা উচিত । তাহলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হবে ।