প্রতিভাবানদের জন্য বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা

📚 প্রতিভাবানদের জন্য বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা ( Special Education for the Talented Children ) : বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রতিভাবানদের অনুসন্ধানের পর , পরবর্তী কাজ হল তাদের জন্য বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করা। প্রতিভাবানদের জন্য সাধারণত যেসব বিশেষ শিক্ষাব্যবস্থা সুপারিশ করা হয় , তার একটি বিবরণ দেওয়া হল—

( ক ) ডাবল প্রমােশন ( Double Promotion ) : পরীক্ষায় খুব ভালাে ফল দেখালে শিক্ষার্থীদের ডাবল প্রমােশন দেওয়ার ব্যবস্থা আগে প্রচলিত ছিল । এর উদ্দেশ্য হল ছাত্রের মেধা অনুযায়ী শ্রেণি নির্বাচন করা । এই পদ্ধতির ত্রুটি হল দৈহিক মানসিক , প্রক্ষোভিক ও সামাজিক পরিণমনের ওপর তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ফলে শিক্ষার্থী নতুন শ্রেণির সহপাঠীদের ( যাদের বয়স অপেক্ষাকৃত বেশি ) সঙ্গে সংগতি স্থাপনে অসুবিধায় পড়ে।

( খ )বিভাগীকরণ ( Grouping ) : এই পদ্ধতিতে প্রতিভাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পৃথক বিভাগ করা হয় । অভিজ্ঞ এবং বিশেষভাবে শিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের দ্বারা তাদের শিক্ষাদান করা হয় । এই পদ্ধতির অন্যতম সুবিধা হল , প্রায় একই মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভাগ গঠিত হওয়ায় শিক্ষকদের পাঠদান সহজ হয় এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযােগিতার মনােভাবও বৃদ্ধি পায় ।
কিন্তু অনেকে সমালােচনা করে বলেন যে , এই পদ্ধতিতে প্রতিভাবান শিক্ষার্থীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মেলামেশার সুযােগ পায় না । ফলে পরিণত বয়সে তারা ( প্রতিভাবানরা ) সাধারণদের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয় না ।

( গ ) বিশেষ পাঠক্রম ( Special Curriculum ) : অনেকে প্রতিভাবানদের জন্য উন্নত ধরনের পাঠক্রমের সুপারিশ করেছেন । সাধারণদের জন্য রচিত পাঠ্যসূচি ছাড়াও প্রতিভাবানদের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর উচ্চতর পর্যায়ের অধ্যয়ন এবং গবেষণামূলক তথ্যাদি সংগ্রহে উৎসাহিত করতে হবে ।
এই প্রসঙ্গে আমেরিকার Triple Track Plan ‘ পদ্ধতির উল্লেখ করা যেতে পারে । এই পদ্ধতির বিশেষত্ব হল সব শিক্ষার্থীর জন্য একই পাঠ্যসূচি প্রবর্তন করা হলেও সময়সীমা নির্ধারিত হয় । শিক্ষার্থীদের মেধা অনুযায়ী । মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সবথেকে কম সময় দেওয়া । হয় , গড় মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য তার থেকে বেশি সময় দেওয়া হয় এবং অল্প মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বাপেক্ষা বেশি সময় দেওয়া হয় ।