ইতিহাস শিক্ষণের নীতিসমূহ

✳️ বর্তমানে জ্ঞানের বিস্ফোরণের যুগে , জ্ঞান – বিজ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির যুগে বিশ্বের পরিবর্তিত সমাজ , অর্থনীতি ও রাজনীতি , শিক্ষা – সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীকে অধিক সচেতন করে তুলতে , শিক্ষার্থীর মধ্যে মূল্যবােধের বিকাশ , প্রায়ােগিক ক্ষমতা ও দক্ষতার বৃদ্ধি করতে ইতিহাস শিক্ষণ উদ্দেশ্যভিত্তিক হওয়া প্রয়ােজন । শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিখন এবং শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ বিকাশের জন্য তাই ইতিহাস শিক্ষণকে কয়েকটি শিক্ষণের মূলনীতি অনুযায়ী পরিচালনা করা প্রয়ােজন । “ Maxisms of History Teach ing ” সম্পূর্ণভাবে মনস্তত্ত্বভিত্তিক হওয়া প্রয়ােজন । এই নীতিগুলি হল—

✨ জানা থেকে অজানা নীতি ( From Known to Unknown ) : ইতিহাস শিক্ষার্থীদের পূর্বজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে অজানা বিষয়ের দিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং জানা ও অজানা বিষয়ের মধ্যে সাধন ইতিহাস শিক্ষণের অন্যতম নীতি ।

✨ সহজ থেকে কাঠিন্যের নীতি : শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিশু মনস্তত্ত্ব অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের সহজ – সরল ঘটনা থেকে জটিল ইতিহাস বিষয়ে আগ্রহী করে তােলা ইতিহাস শিক্ষণের অন্যতম নীতি ।

✨ মূর্ত থেকে বিমূর্ততার নীতি : শিক্ষামূলক প্রদীপনগুলির সাহায্যে ও উন্নত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মূর্ত ধারণা থেকে শিক্ষার্থীদের বিমূর্ত অতীতকে সঠিকভাবে বােঝানাে ইতিহাস শিক্ষণের অন্যতম স্বীকৃত নীতি ।

✨ সমগ্র থেকে অংশের শিক্ষণ : শিক্ষণের অন্যতম নীতি হল সামগ্রিক বিষয় থেকে আংশিক দিকের গতি অনুধাবন । ইতিহাস শিক্ষণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছে তাই ইতিহাস বিষয়ের একটি সামগ্রিক ধারণা থেকে কেন্দ্রীয় আংশিক ধারণাকে স্বচ্ছভাবে তুলে ধরা হয় ।

✨ মনােবৈজ্ঞানিক নীতি থেকে বিজ্ঞানসম্মত যুক্তিনির্ভর নীতি : ইতিহাস শিক্ষার্থীর চাহিদা , আগ্রহ , রুচি , ইচ্ছা – অনিচ্ছা , ও সামর্থ্য ও মানসিক পরিস্থিতি বিচার করে ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনায় গতিপ্রকৃতির যৌক্তিকতার বিচারবিশ্লেষণ করা হয় ।

✨ বিশ্লেষণ থেকে সংশ্লেষণের নীতি : ইতিহাস শিক্ষণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘটনাকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিশ্লেষণ করে পুনরায় সংশ্লেষণের মাধ্যমে একটি সাধারণ সত্যে উপনীত হওয়া ও সমগ্র ধারণার নির্মাণ — এই নীতি অনুসরণ করা হয় ।

✨ আরােহী নীতির অনুসরণ : ইতিহাস শিক্ষণের সময় বাস্তব জীবনের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন উদাহরণ উপস্থাপন করা হয় । সফ এই বাস্তব উদাহরণ থেকে শিক্ষার্থীদের যে Concrete ধারণা গঠিত হয় সেখান থেকে ধীরে ধীরে সাধারণ সত্যে উপনীত হওয়া ইতিহাস শিক্ষণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।

✨ কর্মমুখীনতার নীতি : ইতিহাসের শিক্ষার্থীদের অধিক আগ্রহী করে তােলার জন্য এই নীতি অনুসারে ইতিহাস পাঠের সময় টুনি শিক্ষার্থীদের সক্রিয় করে তোেলা হয় । হাতেকলমে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে ইতিহাসের সত্য অনুসন্ধানে শিক্ষার্থীরা স্বতঃপ্রণােদিত হয় ।

✨ প্রেষণার নীতি : এই নীতি অনুসরণ করে ইতিহাস শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অন্তর্নিহিত প্রবণতাগুলিকে কাজে লাগিয়ে ইতিহাস { চিত্র বিষয়ে শিক্ষার্থীদের স্বতঃপ্রণােদিতভাবে অনুসন্ধিৎসু ও অধিক আগ্রহী করে তুলবেন । ইতিহাস পঠনপাঠনকে আরও জীবনমুখী ( Life centric ) করে তুলবেন ।

✨ক্রীড়াভিত্তিক নীতি : এই নীতি অনুসারে ইতিহাস শিক্ষণ হবে আনন্দের সঙ্গে এবং খেলাচ্ছলে ( Playing technique ) ।
শিক্ষার্থীদের শিখনকে আনন্দ , স্বাধীনতা ও সক্রিয়তার সঙ্গে সার্থক করতে এই ক্রীড়াভিত্তিক শিক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় ।

✨ ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের নীতি : শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত আগ্রহ , রুচি , সামর্থ্য অনুসারে ইতিহাস শিক্ষণের পদ্ধতি নির্বাচন এই নীতির মূলকথা । :

✨ সমন্বয়ের নীতি : ইতিহাস শিক্ষণের ক্ষেত্রে ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয়ের সমন্বয় ঘটায় এবং অন্যান্য সমাজবিজ্ঞানের ক্তি বিষয়গুলির সঙ্গে সমন্বিত করে অখণ্ড জ্ঞানদান করা হয় ।

✨ প্রস্তুতি , ফলশ্রুতি এবং অনুশীলনের নীতি : এই নীতি অনুযায়ী ইতিহাস পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোেযােগী ও আগ্রহী করে তােলা হয় । শিক্ষণের সময় আনন্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় এবং অধীত বিষয়কে বারবার অনুশীলনের বি । মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান , বােধ , প্রয়ােগক্ষমতা ও দক্ষতাকে স্থায়ী করা হয় ।

✨ পরিবর্তন ও বিরতির নীতি : শিক্ষার্থীদের ক্লান্তি , একঘেয়েমি ও মনােযােগের অভাব দূরীকরণের জন্য অনুসৃত পদ্ধতি ও প্রদীপনগুলি পরিবর্তন করা হয় এবং বক্তৃতার মাঝে বিরতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ইতিহাস পাঠে আগ্রহ ও মনােযােগ বৃদ্ধি করা হয় ।

✨ পুনরুৎসাহদানের নীতি : শিক্ষার্থীদের পুরস্কার , উত্সাহদান ও অনুপ্রেরণার মাধ্যমে ইতিহাস শিখনকে কার্যকরী করে তােলা হয় ।

✨ সৃজনশীলতার নীতি : এই নীতি অনুসারে শিক্ষার্থীর অন্তর্নিহিত ক্ষমতাগুলিকে বিকশিত করে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে প্রণােদিত করা হয় ।

✨ দলগত আচরণের নীতি : ইতিহাস পঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত করে দলগত প্রচেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে ইতিহাস শিখন কার্যকরী করে তােলা হয় ।

Related posts:

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবন কথা
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী : 2024
চন্দ্রযান-3 : চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ ভারত
GENERAL STUDIES : TEST-2
GENERAL STUDIES : 1
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স: 8ই সেপ্টেম্বর
'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
তপনের জীবনে তার ছোটো মাসির অবদান আলোচনা করো।
সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝ ?
আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝায় ? এটি কয়প্রকার ও কী কী ?
একটি সাদা কাগজকে কীভাবে তুমি অস্বচ্ছ অথবা ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যমে পরিণত করবে ?
ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অপ্রভ বস্তুও কি আলোর উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে?
বিন্দু আলোক - উৎস কীভাবে পাওয়া যেতে পারে ?
বিন্দু আলোক - উৎস ও বিস্তৃত আলোক - উৎস কী ?
অপ্রভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বপ্নভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
দিনেরবেলা আমরা ঘরের ভিতর সবকিছু দেখতে পাই , কিন্তু রাত্রিবেলা আলোর অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিসই দেখতে পা...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page