অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা

📚 মানব অধিকার সংক্রান্ত সর্বজনীন ঘােষণায় , শিশুদের অধিকার রক্ষাসংক্রান্ত সম্মেলনে এবং সবার জন্য শিক্ষা সংক্রান্ত ঘােষণায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে যে , প্রতিটি শিশুর শিক্ষা লাভের অধিকার আছে । প্রতিটি শিশুর শিখন চাহিদার মধ্যে পার্থক্য দেখা যায় । পাশাপাশি শিক্ষার্জনের ক্ষমতার মধ্যেও ব্যক্তিগত পার্থক্য বিদ্যমান । এছাড়া সমীক্ষায় দেখা গেছে আমাদের দেশে বিশেষ চাহিদা সম্পর্কে ( পূর্বে যাকে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বলা হত ) শিশুর সংখ্যা প্রায় 21,906,769 ( 2001 সালের সেনসাস অনুযায়ী ) । এইসব শিশুদেরও শিক্ষার সমান অধিকার আছে । 1994 সালে সালামানসায় ( Salamanca ) অনুষ্ঠিত বিশেষ চাহিদাযুক্তদের শিক্ষা – সংক্রান্ত বিশ্ব সম্মেলনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষালাভের বিষয়টিকে নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ।

অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ( IE ) ব্যবস্থা সেই বিশেষ লক্ষ্যপূরণের উদ্দেশ্যে চালু হয়েছে । যার মাধ্যমে প্রতিটি শিশুকে , তাদের চাহিদা , সামাজিক পরিস্থিতি নির্বিশেষে সমাজের অন্য শিশুদের সঙ্গে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা যায় । নাম থেকেই বােঝা যায় অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা হল সেই প্রকৃতির শিক্ষা যার লক্ষ্য হল কোনাে শিশু যেন মূলধারার শিক্ষার সুযােগ থেকে বঞ্চিত না হয় । তাদের যেন আলাদা করে বা বাদ দেওয়া না হয় । বিদ্যালয় হবে এমন সামাজিক প্রতিষ্ঠান যেখানে সব শিশু তাদের চাহিদামতাে শিখন লাভ করতে পারবে ।

📜 1994 সালের সালামানসা ঘােষণা প্রতিবন্ধী ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের শিক্ষার সুযােগদানকে একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের রূপ দিয়েছে । UNICEF বলেছে , অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাকে ( IE ) শিক্ষার মূলস্রোত – সংক্রান্ত জাতীয় শিক্ষানীতির অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে । সাধারণ স্কুলকে সব শিশুর জন্য তাদের শারীরিক , বৌদ্ধিক , প্রাক্ষোভিক , সামাজিক , ভাষাগত ও অন্যান্য চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার ব্যবস্থা করে নিতে হবে । ২০০০ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত E – 9 গােষ্ঠীর দেশগুলির সম্মেলন ( যেখানে ভারতও অন্তর্ভুক্ত ছিল ) সকলের জন্য শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হিসেবে ঘােষণা করা হয় যে , সব বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকে মূলধারার শিক্ষাব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে ।