দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতার প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা

📚 দৃষ্টি প্রতিবন্ধিতার প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থা ( Preventive measure of visual impairment ) :

চোখ মানুষের অমূল্য সম্পদ । এই সম্পদকে রক্ষা করতে সর্বদা সতর্ক থাকতে হয় । যেহেতু , দৃষ্টিগত সমস্যা সহজে নিরাময় করা যায় না এবং অধিকাংশ সমস্যার কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই দৃষ্টিগত অসুবিধা যাতে না আসে সেজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত । অর্থাৎ প্রতিরােধমূলক ব্যবস্থাপনাই অধিক যুক্তি যুক্ত । বলা হয় , “ Prevention is better than cure . ” এক্ষেত্রে এই বাক্যটি আরও তাৎপর্যপূর্ণ ।

🧾 সাধারণ রােগ , সংক্রামক রােগ , বাহ্যিক আঘাত প্রভৃতির জন্য চোখে সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে । কোনাে সামান্য উপসর্গকেও উপেক্ষা করা উচিত নয় । যা হােক , আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা হবে , এই অমূল্য সম্পদকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন প্রতিরােধমূলক পন্থা অবলম্বন করা । এর মধ্যে উল্লেখযােগ্য কয়েকটি হল—

( 1 ) জিনঘটিত কারণগুলাের সম্ভাবনা হ্রাস করতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ করতে হবে।

( 2 ) বিবাহের পূর্বে পাত্রপাত্রীর রক্তের শ্রেণি নির্ধারণ ও রেসার্স শ্রেণি নির্ধারণ করা উচিত ।

( 3 ) গর্ভাবস্থায় মা যাতে অপুষ্টিতে না ভােগেন , কোনােপ্রকার সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত না হন এবং কোনােপ্রকার মাদক সেবন না করেন সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে ।

( 4 )গর্ভবতী মা ও নবজাত শিশুকে নিয়মিত টিকাদানের ব্যবস্থা করতে হবে ।

( 5 ) শিশুর জন্মের সময় অবশ্যই একজন ডাক্তার বা অভিজ্ঞ সেবিকা থাকবেন ।

( 6 ) জন্ম – পূর্ববর্তী সময়ে এক্স – রে , অতিমাত্রায় ওষুধ সেবন , জন্মকালীন শ্বাসকষ্ট প্রভৃতি কারণে শিশু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হতে পারে । এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে ।

( 7 ) শিশুর চোখে যাতে কোনােপ্রকার বিষাক্ত পদার্থ , পাথরকুচি , লােহা পড়ে চোখের ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ।

( ৪ ) শিশু যাতে অপুষ্টিতে না ভােগে এবং শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন – এ থাকে তা লক্ষ রাখতে হবে ।

( 9 ) শিশুর দৃষ্টিশক্তি কখনও যদি বাধাপ্রাপ্ত হয় , তখন অবশিষ্ট দৃষ্টিশক্তিকেই ভালােভাবে ব্যবহার করতে হবে এবং পরিবার ও সমাজের প্রতি ইতিবাচক মনােভাব দেখাবে

( 10 ) কোনাে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যাতে তার প্রতিবন্ধিতা জয় করতে পারে সেজন্য শিক্ষক , পিতা – মাতা ও অন্যান্য সদস্যদের এগিয়ে আসতে হবে । চোখ সম্বন্ধে সকলকে সাধারণ ধারণা দিতে হবে ।

এছাড়া জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্যে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে । আই ক্যাম্প ( Eye camp ) , চক্ষু পরীক্ষা কেন্দ্র , চক্ষু সুরক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রচার , আই ব্যাংক ইত্যাদি কর্মসূচির মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে । সর্বশিক্ষা মিশন এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সচেষ্ট হয়েছে।