পরিকল্পিত শিখনের সুবিধাবলি ( Advantages of Programmed Learning )

📚 পরিকল্পিত শিখনের সুবিধাবলি ( Advantages of Programmed Learning ) :

শিক্ষা শিখন প্রক্রিয়ায় পরিকল্পিত শিখনের কার্যকারিতা অবিসংবাদিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে । এই পদ্ধতির উৎকর্ষতা বিভিন্ন গবেষণায় সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে । গতানুগতিক এমনকি আধুনিক অনেক সক্রিয় পদ্ধতি অপেক্ষা বিভিন্ন দিক থেকে এটি অধিকতর ফলপ্রসূ । যার ফলে উন্নত দেশগুলিতে এর ব্যাপক প্রয়ােগ দেখা যাচ্ছে । সমগ্র শিখনব্যবস্থার মধ্যে বিপ্লব আনার ক্ষমতা প্রােগ্রাম শিখন পদ্ধতির মধ্যে বর্তমান , এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদগণ এখন একমত ।

🧾 প্রােগ্রাম শিখন পদ্ধতির সুবিধাগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল—

📜( 1 ) সু – পরিকল্পিত প্রােগ্রাম ভিত্তিক শিক্ষাদান যেহেতু ব্যক্তি শিক্ষার্থীর চাহিদা অনুযায়ী সম্পন্ন হয় , তাই ব্যক্তিগত শিক্ষাদানকে উৎসাহিত করে ।

📜 ( 2 ) এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী তার নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী শেখার সুযােগ পায় । একজন মেধাবী শিক্ষার্থী তার মেধা অনুযায়ী অগ্রসর হতে পারে , আবার একজন অল্প মেধাবী শিক্ষার্থী । তার স্বল্পক্ষমতা অনুযায়ী শেখার সুযােগ পায় ।

📜 ( 3 ) যেহেতু এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীকে সর্বদা সক্রিয় থাকতে হয় , তাই জড়তা ও নিষ্ক্রিয়তার পরিস্থিতি এ ক্ষেত্রে তৈরি হতে পারে না ।

📜 ( 4 ) পরিকল্পিত শিখনে বিষয়বস্তুকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যার ফলে শিখন শিক্ষার্থীদের মনােগ্রাহী হয়ে ওঠে । শিক্ষার্থী এখানে নিজের ক্ষমতাকে বিষয়বস্তু অধ্যয়নে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে , ফলে প্রেষণার মাত্রা উচ্চস্তরে বাধা থাকে ।

📜 ( 5 ) অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই প্রােগ্রামের ফ্রেম প্রস্তুত করেন । এগুলি বিশেষভাবে পরীক্ষিত । যতক্ষণ না আদর্শায়িত হবে ততক্ষণ পরীক্ষানিরীক্ষা চলে । ফলে একবার প্রস্তুত হলে অনেক শিক্ষার্থীই উপকৃত হতে পারে ।

📜 ( 6 ) এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী তার প্রতিক্রিয়ার ফল সঠিক / ভুল সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারে যা তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় উদ্দীপকের কাজ করে এবং তার সক্রিয়তা বজায় থাকে ।

📜 ( 7 ) প্রােগ্রাম পদ্ধতিতে বিষয়বস্তুকে সহজ এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ( ফ্রেম ) সাধারণ ছাত্রের মেধা উপযােগী করে প্রস্তুত হওয়ায় ভ্রান্তির সম্ভাবনা ন্যূনতম পর্যায়ে থাকে ।

📜 ( 8 ) উন্নতিশীল দেশে যেখানে জনসংখার তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা স্বল্প সেই সব দেশে প্রােগ্রাম শিখন খুবই কার্যকারী ।

📜 ( 9 ) সু – শিক্ষকগণ ক্লান্তিকর একঘেয়ে শিক্ষাদান থেকে মুক্ত হতে পারেন এবং সৃষ্টিমূলক কাজে তারা অধিক সময় ব্যয় করতে পারেন ।

📜 ( 10 ) বিভিন্ন বিষয়ে যৌক্তিকতার মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা বজায় রেখে শিক্ষাদানে প্রােগ্রাম শিখন বিশেষভাবে কার্যকারী এবং শিক্ষার্থীদের সৃষ্টিশীল চিন্তা ও বিচারকরণে উৎসাহ জোগায় ।

📜 ( 11 ) বারংবার অনুশীলন এবং গতানুগতিক স্মৃতিশক্তির সাহায্যে যে সকল সঞ্চালনমূলক দক্ষতা ও বৌদ্ধিক ক্ষমতার চর্চা হয় , তার থেকে প্রােগ্রাম শিখনের মতাে স্ব – শিখনের মাধ্যমে শিখন অধিক কার্যকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে ।

📜 ( 12 ) পাশ্চাত্যে স্ব – শিখনের মাধ্যম শ্রেণিকক্ষের ছাত্রদের সামাজিক অবস্থানের মধ্যে এক বিপ্লক্সে সূচনা করেছে । শৃঙ্খলাগত সমস্যা একদিকে যেমন দূর হয়েছে তেমনি প্রাক্ষোভিক এবং সামাজিক সমস্যাও অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে ।

📜 ( 13 ) শিক্ষার্থীর শিক্ষাগত সমস্যা নির্ধারণে প্রােগ্রাম শিখন সাহায্য করে ।

📜 ( 14 ) যেসব দুর্গম অঞ্চলে যেমন নির্জন ও পার্বত্য অঞ্চলে শিক্ষকের বড়ােই অভাব সেই স্থানে শিক্ষার সুষ্ঠু ব্যবস্থার ক্ষেত্রে প্রােগ্রাম শিখনের বিশেষভাবে কার্যকর ।

📜 ( 15 ) প্রােগ্রামের মধ্যে ফ্রেমগুলি বিশেষ যৌক্তিকক্ৰমে বিন্যস্ত থাকে বলে প্রােগ্রাম পদ্ধতিতে শিখনের মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থী বিষয়বস্তুসমূহের যুক্তিগুলি সহজেই অনুধাবন করতে পারে । শিখন যান্ত্রিক না হয়ে প্রয়ােগধর্মী হয় ।