সমস্যাসমাধান পদ্ধতি কাকে বলে ? সমস্যাসমাধান পদ্ধতির স্তরগুলি লিখুন । সমস্যাসমাধান পদ্ধতিতে শিক্ষকের ভূমিকা লিখুন

প্রশ্ন : সমস্যাসমাধান পদ্ধতি কাকে বলে ? সমস্যাসমাধান পদ্ধতির স্তরগুলি লিখুন । সমস্যাসমাধান পদ্ধতিতে শিক্ষকের ভূমিকা লিখুন ।

উত্তর : অপ্রত্যক্ষ নির্দেশদানের আর – একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল সমস্যাসমাধান পদ্ধতি । সমস্যাসমাধান পদ্ধতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে Skinner (1964) বলেছেন , লক্ষ্যে পৌঁছোনোর পথে বাধাগুলি অতিক্রম করাকেই সমস্যাসমাধান পদ্ধতি বলে । এই পদ্ধতিতে বাধা সত্ত্বেও অভিযোজন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকে । সমস্যাসমাধান পদ্ধতির স্তর : শিক্ষাবিদগণ সমস্যাসমাধান পদ্ধতির কতকগুলি স্তরের কথা বলেছেন ,

1. সমস্যার সম্মুখীন (Facing Problem) : সমস্যাসমাধান শুরু হয় চাহিদার মধ্য দিয়ে । চাহিদার উৎস দু – রকম হতে পারে । শিক্ষক চাহিদা উপস্থাপন করতে পারেন বা শিক্ষার্থীরা নিজেরা চাহিদা অনুভব করতে পারে ।

2. সমাধান খোঁজা (Search for Solving) : শিক্ষার্থীরা যখন সমস্যাসমাধানে আন্তরিক হয় , তখন সে সমস্যাটি বিশ্লেষণ করে , নির্দিষ্ট করে । অতঃপর সমস্যাসমাধানের কয়েকটি বিকল্প স্থির করে । বিভিন্ন উৎস থেকে সমস্যাসমাধান সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যসংগ্রহ করে । শিক্ষকের নির্দেশনায় প্রয়োজনীয় পুস্তক , ম্যাগাজিন , জার্নাল এবং যন্ত্রের সাহায্যে তথ্যসংগ্রহ করে । বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত তথ্যকে বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন সমাধানের পন্থাগুলিকে পরীক্ষা করে সর্বোৎকৃষ্ট পন্থাটি নির্দিষ্ট করা হয় ।

3. সমস্যাসমাধান (Problem Solving) : অবশেষে সমাধান অর্থাৎ লক্ষ্যে উপনীত হওয়ার পথে বাধাগুলি দূর হয় এবং সমস্যার সমাধান ঘটে । অনেক সময় মনে হয় সমাধানের পন্থাটি হঠাৎ যেন দেখা দিল । প্রকৃতপক্ষে পূর্বের প্রচেষ্টাগুলির তাৎক্ষণিক সাফল্য না এলেও সমাধানের পথটি সুগম করে । odhom alamit

4. যাচাইকরণ ( Verification ) : অনেক ক্ষেত্রে সমাধানটির যথার্থতা বিচারের প্রয়োজন হয় । অর্থাৎ সমাধানটি সঠিক হয়েছে , নাকি অসম্পূর্ণ রয়েছে ( যদিও মনে হয় সম্পূর্ণ হয়েছে ) তা বিচারের প্রয়োজন হয় । এই চতুর্থ বা শেষ স্তরে অনেক সময় দেখা যায় , যে পদ্ধতিতে সমাধান হয়েছে সেখানে অনেক পরিবর্তন হতে পারে ।

সমস্যাসমাধান পদ্ধতিতে শিক্ষকের ভূমিকা

1. শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষক মাঝারি ধরনের প্রেষণা বজায় রাখতে সচেষ্ট হবেন । পরীক্ষায় দেখা গেছে , অধিক বা কম প্রেষণা কোনোটিই সমস্যাসমাধান শিক্ষণ পদ্ধতিতে আদর্শ নয় । মাঝারি ধরনের প্রেষণাই এই ধরনের শিখনে আদর্শ । যদি মনে হয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চমাত্রায় প্রেষণা দেখা যাচ্ছে তখন শিক্ষক শিক্ষণে বিরত থাকবেন । শিক্ষার্থীরা শান্ত হলেই শিক্ষক অগ্রসর হবেন । প্রেষণা কম হলেও অসুবিধা , কারণ উপযুক্ত প্রেষণার অভাবে সমস্যাসমাধানে যে সক্রিয়তার প্রয়োজন তার অভাব দেখা যায় । শিক্ষক বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করবেন ।

2. শিক্ষার্থীদের আবিষ্কারে উৎসাহ দেবেন । শিক্ষার্থীদের একমুখী আচরণের উপর অধিক গুরুত্ব না দিয়ে বহুমুখী বা বিভিন্ন ধরনের চিন্তা ও আবিষ্কারে উৎসাহ দিতে হবে । শ্রেণিকক্ষে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের চিন্তার জগৎকে খুলে দিতে হবে ।

3. সমস্যাকে সামগ্রিকভাবে উপস্থাপিত করতে হবে । শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে সমস্যাকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরবেন যাতে শিক্ষার্থীরা সমস্যাসমাধানের জন্য সমগ্র পরিস্থিতিটি প্রত্যক্ষ করতে পারে ।

4. শিক্ষক লক্ষ রাখবেন সমস্যাটি যেন শ্রেণির পক্ষে অত্যন্ত জটিল না হয়ে পড়ে । এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের পরিণমনের স্তর বিবেচনা করতে হবে । সমস্যাটি একদিকে যেমন জটিল হবে না তেমনি অত্যধিক সহজও হবে না ।

5. শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে সমস্যা উপস্থাপন করবেন । শিক্ষার্থী পরিকল্পনা অনুযায়ী সমস্যাসমাধানে অগ্রসর হচ্ছে কিনা , তা লক্ষ রাখবেন । সমস্যার সমাধানটি শিক্ষক জানলেও তিনি শিক্ষার্থীদের জানাবেন না । সমাধানের বাধাগুলি যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই অতিক্রম করতে পারে সে জন্য তিনি অপেক্ষা করবেন ।

6. শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিভিন্নরকম সমস্যার অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করবেন । এর ফলে ভবিষ্যতে নানারকম সমস্যাসমাধানের জন্য মানসিক প্রস্তুতি গঠিত হবে ।

7. গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে , সম্পূর্ণ সমাধান অপেক্ষা অসম্পূর্ণ সমাধান বেশি দিন মনে থাকে । তাই সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান থেকে সমাধানে কিছু উত্তরহীন প্রশ্ন থাকা বাঞ্ছনীয় যা শিক্ষার্থীদের নিকট প্রেরণা জোগাবে ।

Related posts:

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবন কথা
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী : 2024
চন্দ্রযান-3 : চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ ভারত
GENERAL STUDIES : TEST-2
GENERAL STUDIES : 1
কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স: 8ই সেপ্টেম্বর
'জ্ঞানচক্ষু' গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
তপনের জীবনে তার ছোটো মাসির অবদান আলোচনা করো।
সমান্তরাল আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝ ?
আলোকরশ্মিগুচ্ছ বলতে কী বোঝায় ? এটি কয়প্রকার ও কী কী ?
একটি সাদা কাগজকে কীভাবে তুমি অস্বচ্ছ অথবা ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যমে পরিণত করবে ?
ঈষৎ স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অস্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বচ্ছ মাধ্যম কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
অপ্রভ বস্তুও কি আলোর উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে?
বিন্দু আলোক - উৎস কীভাবে পাওয়া যেতে পারে ?
বিন্দু আলোক - উৎস ও বিস্তৃত আলোক - উৎস কী ?
অপ্রভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
স্বপ্নভ বস্তু কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
দিনেরবেলা আমরা ঘরের ভিতর সবকিছু দেখতে পাই , কিন্তু রাত্রিবেলা আলোর অনুপস্থিতিতে কোনো জিনিসই দেখতে পা...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You cannot copy content of this page